এমন কী একে-ওপরের দিকে তাকালেনও না। এক সময়ে সব থেকে ঘনিষ্ঠ সঙ্গীরা এখন চিরশত্রু যেন৷ এজলাসে এ দিন বিচারকের সামনে কাঠগোড়ায় ছিলেন কুন্তল - তাপস - নীলাদ্রি এবং বাকি চার অভিযুক্ত এজেন্ট। আদালত সূত্রে খবর, কুন্তল ও তাপসের মাঝে ছিলেন কৌশিক ঘোষ। কিন্তু এত দিন পর দেখা হয়েও একটি বারও কথা বললেন না। পরস্পরের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ। ফলে তাপস কুন্তল কথা বললেন না। কাঠ গোড়ায় মোট সাত অভিযুক্তকে তোলা হয়। কাঠ গোড়ার বাঁদিক থেকে শুরু প্রথমে নীলাদ্রি ঘোষ, দ্বিতীয় স্থানে তাপস মণ্ডল, তৃতীয় স্থানে কৌশিক ঘোষ, চতুর্থ স্থানে কুন্তল ঘোষ,পঞ্চম স্থানে শাহিদ ইমাম ষষ্ঠ স্থানে আলি ইমামএবং সপ্তম স্থানে আব্দুল খালেক দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু কাঠ গোড়ায় দাঁড়ালেও একে অপরের সঙ্গে কথা বললেন না কুন্তল - তাপস।
advertisement
আরও পড়ুন: হাতুড়ের কীর্তি! রক্ত বেরোনো বন্ধ করতে কানে মারাত্মক এমসিল আঠা ঢেলে দিল হাতুড়ে
আরও পড়ুন: বালিশ দিয়ে মুখ চেপে গোপনাঙ্গে আঘাত, প্রেমিকের জন্য স্বামীকে মারল ৪৭ বছরের মহিলা
কেন? তাপস মণ্ডলের অভিযোগ, তিনি ১৯ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন কুন্তল ঘোষকে। বেআইনি ভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা তুলত এজেন্ট - সাব এজেন্টর মাধ্যমে। সেই টাকা মিডলম্যানের মাধ্যমে পৌঁছাত তাপস মণ্ডলের কাছে। সেখান থেকে টাকা যেত মানিক ভট্টাচাৰ্য ও কুন্তল ঘোষের কাছে। রাজ্যের বেসরকারি বিএড - ডিএলএড কলেজ থেকে প্রচুর চাকরি প্রার্থীর থেকে টাকা নিয়েছেন তাপস মণ্ডল, অভিযোগ সিবিআইয়ের। কারণ বেসরকারি বিএড-ডিএলএড কলেজের মাথা ছিলেন এই তাপস।
অন্য দিকে কুন্তলের অভিযোগ, তাপস মন্ডল ৫০ লক্ষ টাকা চেয়েছেন কুন্তলের থেকে। পাল্টা তাপসের দাবি, যাঁদের চাকরি হয়নি সেই সব চাকরি প্রাথীরা টাকা ফেরত চাইছিলেন তাপসের থেকে। সেই জন্য টাকা চাওয়া হয়েছে কুন্তলের থেকে। সিবিআইয়ের দাবি, কুন্তল নিয়োগ দুর্নীতিতে যেমন বেআইনি ভাবে টাকা নিয়ে অপরাধ করেছেন, তেমনই তাপস মণ্ডলও একই অপরাধে অপরাধী। তাপসও টাকা তুলেছেন চাকরি দেওয়ার নাম করে।সোমবার নিজাম থেকে তাপস বেরোনো সময় বলেন নাম না করে কুন্তলের উদ্দেশে , ১৯ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ডিমান্ড করেছিল ৷ আলিপুর আদালতে ঢোকার সময় বলেন, ‘‘আমি কোথায় টাকা নিয়েছি? নিয়েছে তো কুন্তল। কুন্তল যা ডিমান্ড করেছিল তাই দিয়েছি।’’
তাপস মণ্ডল, নীলাদ্রি ঘোষ ও কুন্তল ঘোষকে ১৩ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। তাপস মণ্ডলকে নিজামে আনার সময় জিজ্ঞেস করা হয় বিভাস অধিকারীকে চেনেন? তাপস বলেন, ‘‘চিনবো না কেন। আমাদের সংগঠনেরই একজন মেম্বার। চিনি।’’ এরপরই তাঁকে নিজামে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। সিবিআই সূত্রে খবর, এই বিভাস অধিকারী হলেন প্রাইভেট টিচার্স ট্রেনিং কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সম্পাদক। তাপস সভাপতি হওয়ার আগে এই বিভাসই ছিলেন সর্বেসর্বা।
বিভাস হলেন মানিক ভট্টাচার্যের খুব ঘনিষ্ঠ, রাইট হ্যান্ড কার্যত। কুন্তল ঘোষকে এ দিন জেল থেকে আলিপুর আদালতে তোলার সময় তিনি তাপস মণ্ডল গ্রেফতার প্রসঙ্গে বলেন, "আমার অভিযোগের সত্যতা প্রমান হল।,"এমনকি কুন্তল তাপস এতই দ্বন্দ্ব যে সিবিআইও আলাদা দুটো গাড়িতে এঁদের নিয়ে আসে।
ARPITA HAZRA