TRENDING:

মাতৃহারা হলেন মতুয়ারা, জেনে নিন বড়মার জীবনকথা

Last Updated:

বিয়ের পর থেকেই স্বামীর সঙ্গে মতুয়ার নানা কাজের সঙ্গে যু্ক্ত হয়ে পড়েন বীণাপাণি ঠাকুর।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#কলকাতা: প্রয়াত মতুয়া মহাসংঘের বড়মা বীণাপাণি ঠাকুর। গত বছরই পালিত হয় তাঁর জন্মশতবর্ষ। তাঁর প্রয়াণে মাথার ওপর ছাদ হারালেন রাজ্যের অসংখ্য মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ।
advertisement

জন্ম বরিশালের জব্দকাঠিতে। ১৯৩৩ সালে বিয়ে হয় ফরিদপুরের ওরাকান্দির প্রমথরঞ্জন ঠাকুরের সঙ্গে। মতুয়া মহাসংঘের প্রতিষ্ঠাতা হরিচাঁদ ঠাকুরের বংশধর প্রমথরঞ্জন ঠাকুর। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর সঙ্গে মতুয়ার নানা কাজের সঙ্গে যু্ক্ত হয়ে পড়েন বীণাপাণি ঠাকুর। বুঝতে শেখেন সাংগঠনিক কাজকর্মও। স্বাধীনতার লড়াইয়ে যুক্ত ছিলেন প্রমথরঞ্জন ঠাকুর। দেশ স্বাধীনের লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েন বীণাপাণি দেবীও। চারপাশ উত্তপ্ত। দেশের জন্য লড়াইয়ের পাশাপাশি সংগঠনকেও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লড়াই চলেছে। নানা বাধা বিপত্তি। তবু ফিরে তাকাতে শেখেননি। এগিয়ে যাওয়া ছাড়া রাস্তা নেই।

advertisement

১৯৪৭-এ দেশ স্বাধীন হল।  সেই সঙ্গে এল দেশভাগ। তৈরি হল নতুন সংকট। ১৯৪৮। বড় ছেলে কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর ও পরিবারের সকলকে নিয়ে এদেশে চলে এলেন বীণাপাণি দেবী। শুরু হল নতুন লড়াই। চব্বিশ পরগনায় উদ্বাস্তু কলোনি গড়ে তুললেন। নাম হল ঠাকুরনগর। এখান থেকেই ক্রমে ছড়াতে থাকে মতুয়াদের মহাসঙ্ঘের কাজকর্ম। এখানেই তৈরি হয় মন্দির। ছোট ছেলে মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর। ১৯৯০ সালে স্বামী প্রমথরঞ্জন ঠাকুরের মৃত্যুর পর মতুয়া মহাসংঘের দায়িত্ব তুলে নেন বীণাপাণি ঠাকুর। হয়ে ওঠেন মতুয়াদের বড়মা।  মতুয়াদের মাথার উপর ছাদ হয়ে দাঁড়ান তিনি। নানা বিপদে তিনিই হয়ে ওঠেন আশ্রয়, ভরসা। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকেন। কিন্তু বয়স বাড়ছিল। ক্রমে বার্ধক্যজনিত সমস্যা বাড়ছিল।

advertisement

বড় ছেলে কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরকেই বেছে নিলেন তাঁর উত্তরসূরি হয়ে। ২০১৪-র অক্টোবর। মারা গেলেন কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর। ছেলের মৃত্যুযন্ত্রণা সারা জীবনের সঙ্গী হয়ে রইল। তবু শক্ত হয়ে দাঁড়ালেন তিনি। মতুয়া মহাসঙ্ঘ যাতে কোথাও ভেঙে না পড়ে, সে দিকে তখনও সতর্ক দৃষ্টি। ততদিনে রাজ্য রাজনীতিতে নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিয়েছে মতুয়ারা। পরিবারের মধ্যে রাজনৈতিক মতাদর্শের বিরোধ বেড়েছে। বড় ছেলের পরিবার যখন তৃণমূলে, তখন ছোটছেলে যোগ দিয়েছে বিজেপিতে। বেড়েছে দুই ঘরের দূরত্ব। দুই রাজনীতির মানুষের মধ্যে ভাগ হয়ে গেলেন কি বড়মা। জিজ্ঞাসা ছিল মতুয়াদের মধ্যেই। তবুও বড়মা তো ছিলেন।

advertisement

২০১৮র দুর্গাপুজোর অষ্টমী। জন্মশতবর্ষ পালন করা হল বীণাপাণি ঠাকুরের। তাঁর একশবছর নিয়ে দ্বিমত রয়েছে পরিবারের মধ্যেই। তবে তাঁরই বিবৃতিকে সম্বল করে পালন হল জন্মতিথি। বার্ধক্যজনিত সমস্যা বাড়ছে। হাত কাঁপে, শুনতে সমস্যা হয়, হাঁটাচলায় জোর কমেছে। তবু মতুয়াদের বড়মাই আশ্রয়। ২০১৮-র ১৫ নভেম্বর। তাঁকে বিশেষ বঙ্গবিভূষণ সম্মান দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারিতে এ রাজ্যে এলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেখা করলেন বড়মার সঙ্গে।  ... ২০১৯এর মার্চের শুরুতেই কোচবিহার মহাবিদ্যালয় সাম্মানিক ডিলিট দিতে আগ্রহ প্রকাশ করল।

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
'আসছে বছর আবার হবে'! দিঘার সমুদ্রে বিলীন দেবী দুর্গা, ঢেউয়ের গর্জনে মিশল বিদায়ের সুর
আরও দেখুন

শতবর্ষ পালন করা বীণাপাণি দেবীর শারীরিক অবস্থার ক্রমে অবনতি হতে থাকল। বাড়ছিল শ্বাসকষ্ট। ফু্সফুসে জল। হাসপাতালে ভরতি করা হল বড়মাকে। সারা জীবন লড়াই করে যাওয়া বড়মা লড়লেন। কিন্তু এবারের লড়াইয়ে হার স্বীকার করতে হল। মাথার উপর ছাদ হারাল কয়েক হাজার মতুয়া সদস্য।

বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
মাতৃহারা হলেন মতুয়ারা, জেনে নিন বড়মার জীবনকথা