এদিন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন " ক্লাসিক্যাল বা ধ্রুপদী ভাষা থেকে বাংলা ভাষাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যে রাজ্য থেকে একাধিক নোবেল প্রাপক রয়েছেন, দেশের জাতীয় সংগীত যে মাটি থেকে তৈরি হয়েছে, সেখানকার ভাষা বাদ দেওয়া হল। আমরা এই ভাষাকে তালিকার মধ্যে যোগ করার দাবি রেখেছি।"
তবে শুধু বাংলা ভাষার প্রসঙ্গই নয় জাতীয় শিক্ষানীতিতে একাধিক প্রসঙ্গ তুলে এদিনের বৈঠক এ রাজ্যের আপত্তির কথা তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে যেখানে করোনার গ্রাফ ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী সেখানে জাতীয় শিক্ষা নীতি কার্যকর করার কিসের এত তাড়াহুড়ো? পরোক্ষভাবে বৈঠকে সেই প্রশ্নও তোলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, " আমরা বলেছি জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে আমাদের প্রাথমিক মতামত কেন্দ্রকে পাঠিয়েছি। কিন্তু দেশজুড়ে যেখানে করোনার সংক্রমণ ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী সেখানে আপাতত করোনার সংক্রমণ ঠেকানো টাই অগ্রাধিকার দেওয়া হোক। তাই আমরা জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে আমাদের মতামত জানানোর সময় আরও চেয়েছি। ওই সময় সীমার মধ্যে আমরা বিশদে জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে আরও মতামত জানাতে চাই।"
advertisement
এদিনের বৈঠকে একাধিক ভাষা কার্যকর, জাতীয় স্তরে ভর্তির জন্য একটি কনটেস্ট করা কেন্দ্রীয়ভাবে স্নাতক স্তরের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য, এমফিল কোর্স বন্ধ করে দেওয়া সহ একাধিক প্রসঙ্গ নিয়ে এই দিনের বৈঠকে আপত্তি তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এদিন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন " আমরা বলেছি উচ্চশিক্ষাকে সংকুচিত করা হচ্ছে এবং তাতে যেভাবে কেন্দ্রীয়করণ ও বাণিজ্যিকীকরণ করা হচ্ছে আমরা তাঁর বিরুদ্ধে। জাতীয় শিক্ষানীতিতে রাজ্যগুলির ক্ষমতা খর্ব করা হচ্ছে। জাতীয় শিক্ষানীতিতে যেভাবে কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষা পরিচালনা করার কথা বলা হচ্ছে তাতে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ধ্বংস করবে।"
এই দিনের বৈঠকে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ জিডিপি নিয়েও সরব হন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী এই ৬ শতাংশ জিডিপি দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে কিন্তু এই জিডিপি কে দেবে তা নিয়েই মূলত বৈঠকে সরব হন শিক্ষামন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শিক্ষা মন্ত্রী বলেন " জিডিপির কে কত টাকা কিভাবে দেবে কেন্দ্র কত দেবে রাজ্য কত দেবে সেটাও জাতীয় শিক্ষানীতিতে স্পষ্ট করে বলা হয়নি। শুধু তাই নয় জাতীয় শিক্ষানীতিতে পরিকাঠামোগত পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে কিন্তু আত্মিক দায়িত্ব রাজ্যের কতটা কেন্দ্রের কতটা সেটাও জাতীয় শিক্ষানীতিতে স্পষ্ট নেই।"
যদিও জাতীয় শিক্ষানীতি এরাজ্যে কবে থেকে কার্যকর হবে সেই প্রসঙ্গে অবশ্য জল্পনা জিইয়ে রাখলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, " বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের বিস্তারিত মতামত দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে সময় চেয়েছি। রাজ্যে আগে আমরা করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা করবো নাকি জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে আলোচনা করব। আমরা আমাদের প্রাথমিক রিপোর্ট পাঠিয়েছে কেন্দ্রকে। কিন্তু আমাদের আরও সময় দেওয়া দরকার বিস্তারিত মতামত দেওয়ার জন্য। সেই সময়টুকু দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি আজকের বৈঠকে।"
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়