নবগ্রামের এক যুবক দিন কয়েক আগে স্ক্রাব টাইফাসে মারা গিয়েছেন । তারপরই ওই এলাকার বছর চল্লিশের এক বাসিন্দা একই রোগে আক্রান্ত । অতশী মণ্ডল নামে ওই মহিলা প্রবল জ্বর নিয়ে বহরমপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই লাল পোকার কামড়ই অজানা জ্বরের কারণ কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷
এরপরই এই রোগ নিয়ে ফের নতুন করে আতঙ্কিত শহরের বাসিন্দারা ৷ গত বছরও কলকাতায় এই রোগের সংক্রমণ দেখা গিয়েছিল ৷ জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে পোকার কামড়ে অজানা জ্বরের খবর পাওয়া গিয়েছে ৷ সঙ্গে সারা দেহে ক্ষত ৷ সরকারি হিসেব অনুযায়ী, বছরের শুরু থেকে এপর্যন্ত মোট ৩৬ জন স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৷ এ পর্যন্ত মৃত্যুর ঘটনা দুটি ৷
advertisement
পরিস্থিতি এখনও সাংঘাতিক না হলেও ইতিমধ্যেই এই রোগ নিয়ে যথেষ্ট সতর্ক কলকাতা পুরসভা ৷ রোগটা কী ? এর থেকে বাঁচার কী উপায় ? এই সব নিয়েই জনগণকে সচেতন করা হচ্ছে ৷
কী এই স্ক্যাব টাইফাস?
মাইট নামে অতি ক্ষুদ্র একটি জীব কামড়ালে ব্যাকটেরিয়াঘটিত এই অসুখ হয়। যার জন্য দায়ী ওরিয়েনসিয়া শুশুগামুসি নামের একটি ব্যাক্টেরিয়া। দেখতে ছোট পোকার মতো হলেও আদতে মাইট কিন্তু কোনও পোকা নয়। আকারে ০.২ মিলিমিটার থেকে ০.৪ মিলিমিটার মাপের হয় মাইট। এর লার্ভা থেকে এই রোগ ছড়ায়।
স্ক্রাব টাইফাসের লক্ষণ:
১. সাংঘাতিক মাথা ব্যথা
২. হাই-ফিভার ( ১০৪ পর্যন্ত জ্বর )
৩. পিঠে ও বুকে র্যাশ (যা ক্রমশই ছড়াবে )
৪. লো ব্লাড প্রেশার ( হাইপোটেনশন )
৫. উজ্জ্বল আলোর দিকে চোখ মেলে তাকাতে না পারা
৬. পেশিতে বিশাল ব্যথা
কলকাতায় কবে প্রথম এই রোগ ধরা পড়েছিল, তা চিকিৎসকরা বলতে না পারলেও বছর দুই আগে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে ভর্তি হওয়া এক শিশুর শরীরে এই রোগ ধরা পড়ে ৷
উত্তরবঙ্গের মিরিক এবং সংলগ্ন পাহাড়ি অঞ্চলেই সাধারণত মাইটের খোঁজ পাওয়া যায় ৷ তাই কলকাতায় এই রোগের উদয় হওয়ার পিছনে কোনও বাহকের ভূমিকা রয়েছে বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা ৷ তবে আশার আলো বলতে একটাই যে ডেঙ্গির যেখানে নির্দিষ্ট কোনও ওষুধ নেই ৷ সেখানে স্ক্রাব টাইফাসের কিন্তু ওষুধ রয়েছে। ফলে সঠিক চিকিৎসা হলে জীবনহানির আশঙ্কা কম। আর এই রোগ ছোঁয়াচেও নয় ৷ ডেঙ্গির মতো ওষুধ স্প্রে বা ফগিং করে স্ক্রাব টাইফাস থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। স্ক্রাব টাইফাসকে রুখতে দরকার সচেতনতা ও সঠিক সময়ে চিকিৎসা ৷