অন্যদিকে, শিল্প সেতু তৈরি হলে উপকৃত হবেন বর্ধমান, হুগলি, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের মানুষ। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে বাড়বে বিনিয়োগও। বর্ধমানের সদরঘাটে দামোদরের ওপর রয়েছে কৃষক সেতু। এই সেতু বর্ধমানের সঙ্গে দক্ষিণ দামোদর ও বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুই মেদিনীপুর সহ বিস্তীর্ণ এলাকার যোগসূত্র স্থাপন করেছে। কিন্তু প্রায় ৫০ বছরের পুরনো এই সেতু এখন ভার বহনে অক্ষম। প্রায় বছর দেড়েক আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন বর্ধমান শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া দামোদর নদের ওপর নতুন আরও একটি সেতু গড়া হবে। নয়া সেই সেতুর তিনি নাম দিয়েছিলেন ‘শিল্প-সেতু’।
advertisement
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন সেতুটি হবে চার লেনের। বাঁকুড়া মোড় পর্যন্ত রাস্তাও চার লেনের হবে। ৬৪০ মিটার দীর্ঘ এই সেতু তৈরি করতে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৩৪৮ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যে দরপত্র ডাকা হয়েছে। দরপত্র সংক্রান্ত প্রক্রিয়া শেষ হলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। বর্তমান সেতুর ওপর দিয়েই চলে গিয়েছে ৭ নম্বর রাজ্য সড়ক বা বর্ধমান-আরামবাগ রোড। কিন্তু সেই রাস্তা এখন গাড়ির চাপে ন্যুব্জ হয়েছে। বর্তমানে কৃষক সেতুর অবস্থা এতটাই খারাপ যে সংস্কার বা মেরামতির জন্য অধিকাংশ সময় তা বন্ধ রাখতে হয়। চূড়ান্ত সমস্যায় পড়তে হয় বাসিন্দাদের।
এই সমস্যার পাকাপাকি সমাধান করতেই শিল্প সেতুর পরিকল্পনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরুলিয়া, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের সঙ্গে বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলারও অন্যতম সংযোগকারী সেতু হল কৃষক সেতু। এই সেতুর পাশেই গড়ে উঠবে নতুন ‘শিল্প-সেতু’। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, দক্ষিণ দামোদর এলাকায় কৃষিভিত্তিক শিল্প ক্রমশ বাড়ছে। এই সেতু তৈরি হয়ে গেলে সেই সম্ভাবনা আরও বাড়বে। দামোদরের উপরে ৪৬ বছর আগে তৈরি হয়েছিল কৃষক সেতু। দুই লেনের এই সেতু বর্ধমান শহরের উন্নতিতে সহায়ক হয়েছিল। শহরের ব্যবসা-বাণিজ্য মূলত দক্ষিণ দামোদর এলাকা বলে পরিচিত রায়না, মাধবডিহি, খণ্ডঘোষ, জামালপুরের উপরে নির্ভরশীল হয়ে উঠেছিল।
আরও পড়ুন : এলোপাথাড়ি কোপে পেট থেকে বেরিয়ে আসা অন্ত্র ওড়াল বাতাসে! বিধবা মায়ের প্রেমিককে নৃশংসভাবে খুন ২ ভাইয়ের
তার পরে দামোদরে অনেক জল গড়িয়েছে। জিটি রোড চার লেনের হয়েছে, শহরে টাউন সার্ভিস ছাড়া অন্য বাস চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। ফলে, শহরের একাংশে ব্যবসায় প্রভাব পড়েছিল। এ বারের রাজ্য বাজেটে কৃষক সেতুর পূর্ব দিকে সমান্তরাল ভাবে চার লেনের আর একটি সেতু তৈরির ঘোষণায় দক্ষিণ দামোদর তো বটেই, বর্ধমান শহরের আর্থ-সামাজিক উন্নতি ঘটবে বলে আশা বাসিন্দাদের। বর্ধমান ও দক্ষিণ দামোদরের পাশ দিয়ে আর্থিক করিডর যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তা বাস্তবের মুখ দেখলে বর্ধমান-সহ লাগোয়া অঞ্চলের চরিত্র পাল্টে যাবে বলেও মনে করছেন অনেকে।