গত ৯ ফেব্রুয়ারি নৈহাটির ছাইঘাটে যখন এই পরিমাণ বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছিল তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিআইডির বম্ব ডিসপোসাল স্কোয়াডের অফিসারেরা। তাদের সামনেই এত পরিমাণ বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করা হলেও কেন আগাম পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? বোমা নিষ্ক্রিয় করার যে পদ্ধতি রয়েছে, তা মানা হয়নি বলেও অভিযোগ।
সূত্রের খবর, নাশকতার ক্ষেত্রে যে ধরণের বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়ে থাকে তার প্রমাণ এই ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে পায়নি ফরেন্সিক। তবে কি ধরনের বিস্ফোরক ছিল তা জানার জন্য ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট এলে আরও স্পষ্ট হবে বিস্ফোরণের অভিঘাত কেন এতটা ছিল। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই বিস্ফোরণের জেরে যে মাশরুম ক্লাউড ও শক ওয়েভ তৈরি হয়েছিল, তা সাধারণ বাজির মশলায় হওয়া সম্ভব নয়। তাই কি ধরণের বিস্ফোরক ছিল তা জানতে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আসা জরুরি। যদিও রাজ্য ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির এক বিজ্ঞানী বলেন, "সাধারণ বাজির মসলা থেকেও এটা হওয়া সম্ভব। একবারে বেশি মাত্রায় বিস্ফোরক ফেটেছে বলেই এই অভিঘাত তৈরি হয়েছে।"
advertisement
সম্প্রতি নৈহাটির দেবক এলাকায় বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের জেরে কয়েকজনের মৃত্যু হয়। তারপর ওই এলাকায় সমস্ত বেআইনি বাজি কারখানা থেকে বিস্ফোরক বাজেয়াপ্ত করে তা নিষ্ক্রিয় করার কাজ শুরু করে পুলিশ। ছাইঘাটেই বাজেয়াপ্ত হওয়া বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার কাজ চলছিল। পুলিশের সঙ্গে সিআইডির বম্ব ডিস্পোসাল স্কোয়াড এইকাজে যুক্ত ছিল। অন্যান্যদিন খুব বেশি হলে ৫০০ কেজি বাজি নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। কিন্তু ৯ জানুয়ারি একবারে ২৩০০ কেজি বাজি নিষ্ক্রিয় করা হয়। কিন্তু হঠাৎ এত পরিমাণ বাজি কেন একবারে নিষ্ক্রিয় করতে গেল সিআইডি ও পুলিশ তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী।
রিপোর্ট যাই আসুক গত ৯ জানুয়ারি দিনটাকে আজও ভুলতে পারছে না নৈহাটিবাসী ও গঙ্গার ওপারে চুঁচুড়ার বাসিন্দারা। ওই বিস্ফোরণের জেরে নৈহাটির বিরাট এলাকায় যেমন অনেক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তেমনি চুঁচুড়াতেও কয়েকশো বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারও দেওয়ালে চিড় ধরেছে, তো কারও বাড়ির কাঁচ ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। সরকার ইতিমধ্যেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু করলেও আজও আতঙ্ক কাটেনি তাঁদের।
SUJOY PAL