কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেআইনি নির্মাণটি রয়েছে ১০২ নম্বর ওয়ার্ডের চিত্তরঞ্জন কলোনিতে। অভিযোগ পেয়ে ‘ডেমোলিশন স্কোয়াড’ বা বাড়ি ভাঙার কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। সঙ্গে ছিল যাদবপুর থানার পুলিশ। অভিযোগ, বেআইনি নির্মাণটির ছাদের অংশ ভাঙতে শুরু করেন কর্মীরা। মূলত অভিযোগ ছিল, পুরসভাকে না জানিয়ে প্ল্য়ান বহির্ভূত হবে একটা অংশ করেছে নির্মাণ সংস্থা। তিনতলার ছাদের সেই অংশ ভেঙেও ফেলার কাজও শুরু হয়।
advertisement
আরও পড়ুন– উৎকৃষ্ট মানের সৌদি আরবের ‘আজওয়া’ খেজুর এখন চাষ হচ্ছে উত্তর দিনাজপুরে
অভিযোগ, নিজের ওয়ার্ডে বাড়ি ভাঙা হচ্ছে খবর পেয়ে দলবল নিয়ে হাজির হন ১০২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সীমা ঘোষ। ঘটনাস্থলে এসে পুলিশের উপস্থিতিতেই পুরসভার কর্মী আধিকারিকদের অবিলম্বে কাজ বন্ধ করার জন্য চাপ দেন তিনি। কাউন্সিলরের বাধার ফলে কাজ বন্ধ করে যন্ত্রপাতি গুটিয়ে ফিরে আসেন পুরকর্মীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই বেআইনি নির্মাণের প্রোমোটার পুরীতে ঘুরতে গিয়েছেন। তাঁকে আড়াল করতে ঘটনাস্থলে হাজির হন কাউন্সিলর। সীমাদেবীর ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন ওঠতে শুরু করেছে। তবে এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার ১০২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সীমা ঘোষ বলেন, ‘একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। বিল্ডিং বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে নিয়েছি। বাড়ি নির্মাণের কাজ হবে। এই বহুতলের কোনও অংশই ভাঙা হবে না। যে ব্যক্তি বাড়িটি বানাচ্ছেন তিনি নিম্ন মধ্যবিত্ত, নিজের ফ্ল্যাট নিজেই বানাচ্ছেন তিনি। কোন প্রোমোটারি ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: মালদহে সোনার দোকানে ডাকাতি, বাধা দিতে গিয়ে প্রাণ গেল সিভিক ভলেন্টিয়ারের! আহত দোকান মালিকও
সাম্প্রতিককালে বারবার বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। টক টু মেয়র-সহ মেয়রের নিজস্ব হোয়াটসঅ্য়াপে বারবার বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ এসেছে বিভিন্ন এলাকা থেকে। ফিরহাদ হাকিম স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, কোনওভাবেই বেআইনি নির্মাণ বরদাস্ত করা হবে না। পুরসভার সমস্ত নির্মাণের তথ্য বরো চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। যাতে সহজেই বেআইনি নির্মাণ চিহ্নিত করা যায়। তারপরেও কলকাতা পুরসভার টিম বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে গিয়ে এভাবে ফিরে আসায় প্রশ্ন উঠছে পুরসভার সদিচ্ছা নিয়ে। কারণ সেই বাধা দিয়েছেন স্বয়ং শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর। এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার বিরোধীদল বিজেপির কাউন্সিলর সজল ঘোষ জানান, সংবাদমাধ্যমে মেয়র এক কথা বললেও নিজের দলের কাউন্সিলরাই সে কথা মানছেন না। আসলে এই সরকার এই পুরসভা সবটাই কাটমানিতে চলে, এগুলো কোনওদিন বন্ধ হবে না। তাই প্রকাশ্যেই প্রোমোটারের হয়ে পথে নামছে তৃণমূলের কাউন্সিলর।
পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ সূত্রে খবর, বেআইনি নির্মাণ বন্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। এদিন কাউন্সিলারের বাধায় ফিরে আসতে হলেও ভবিষ্যতে পিছু হঠা হবে না। পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে।
