২০১৬-য় এক দল পর্বতারোহীর সঙ্গে এভারেস্ট অভিযানে যান পরেশ নাথ ও গৌতম ঘোষ ৷ অভিযান শেষে বাকিরা ফিরে এলেও ফেরেননি এই দু’জন ৷ অভিযান সম্পূর্ণ করার আগেই মৃত্যু হয় তাদের দলের আরেক পর্বতারোহী সুভাষ পালের ৷ এভারেস্টে অভিযান শেষের আগে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা গেলেও আবহাওয়া প্রতিকূল হওয়ার জন্য মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যায় উদ্ধারকাজ ৷ তাই এভারেস্ট শৃঙ্গের পথেই বরফের নীচে শায়িত ছিলেন গৌতম ও পরেশের মৃতদেহ ৷
advertisement
এবছর আবহাওয়া ঠিক হতেই এভারেস্টে উদ্ধার অভিযানে নামে প্রশিক্ষিত দল ৷ বৃহস্পতিবার এভারেস্টের সাউথ কোলে ২ নং ক্যাম্প থেকে উদ্ধার হয় পরেশ নাথের মৃতদেহ ৷
জানা অজানা এভারেস্টের ১৮০ বছর
গত বছর সাগরমাতা পলিউশন কন্ট্রোল কমিটির তরফে জানানো হয়, এভারেস্টের ট্রাই অ্যাঙ্গেল ফেসে রয়েছে গৌতম ঘোষের দেহ ৷ ব্যালকনির নিচে ফিক্সড রোপের সঙ্গে তাঁর দেহ বেঁধে রাখা হয়েছে ৷ অন্যদিকে, সাউথ কলে মেলে পরেশ নাথের দেহ ৷ দেহ নামিয়ে ক্যাম্প ৪-এর কাছে একটি তাঁবুর মধ্যে প্যাকিং করে রাখা হয় ৷
গৌতমের দেহ রয়েছে ক্যাম্প ৪-এর উপরেই ৷ ক্যাম্প ৪-এর উচ্চতা প্রায় ৮,৭৪০ মিটার ৷ প্রচণ্ড হাওয়া ও তুষারপাতের জেরে ক্যাম্প ২ থেকে সেবার আর এগোতে পারেনি উদ্ধারকারী দল ৷
জয় পরাজয়ের এভারেস্ট
পর্বতারোহীদের মৃতদেহ উদ্ধারকারী দলের নেতা পূর্বা শেরপা জানিয়েছেন, গৌতম ঘোষের মৃতদেহের কাছে পৌঁছতে আরও দু-তিনদিন সময় লাগবে ৷
উল্লেখ্য, দুই দিন আগে সার্চিং অভিযানে গিয়ে দুর্ঘটনায় আহত হন এক শেরপা ৷
অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় কলকাতা পুলিশের দক্ষ অফিসার গৌতম ঘোষ। চারবার এভারেস্ট জয়ের চেষ্টার পর এবার এসেছিল সাফল্য। এভারেস্টের চূড়ায় উঠে হয়ত মনে হয়েছিল পৃথিবী তাঁর হাতের মুঠোয়। কিন্তু ফেরার পথে বাদ সাধল ক্লান্তি।
ছোটবেলা থেকে দেখা স্বপ্নকে ছুঁয়ে দুর্গাপুরের শারীরিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরেশনাথের কী মনে হয়েছিল তাও অজানাই থেকে গেল। বরফের যে বাধা ডিঙিয়ে বার বার পাহাড় শৃঙ্গ ছুঁতে অভ্যস্থ পর্বতারোহীরা, যে বরফকে কখনই প্রতিবন্ধক বলে মনে হয়নি, তুষারধসের কবলে পড়ে সেই বরফের নীচেই চিরকালের মত ঘুমিয়ে পড়েন তাঁরা ৷ যাঁরা হিমালয়কে ভালবাসেন তাঁরা বোধহয় এভাবেই হিমালয়ের কোলেই ঘুমিয়ে পড়তে ভালবাসেন।