পুরসভা কি কিছুদিন পরে নিয়োগ করবে বাকিদের মতো? নাকি বেকার হয়ে যেতে হবে। এমনই সব চিন্তা ভাবনা করতে করতে শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করারই সিদ্ধান্ত নিলেন পার্কের ওই বিদ্যুৎ কর্মীরা। তাই প্রতিদিনই নিয়ম করে পার্কে আসেন এই ইলেক্ট্রিশিয়ানরা। কাজও করেন আগের মতোই।
পার্ক শুরু হওয়ার সময় থেকেই এখানে কাজ করেন এই বিদ্যুৎ কর্মীরা। কেএমডিএ-র থেকে শেষ বেতন পান কর্মীরা। পুরসভার হাতে থাকা পার্কে এবার তাঁদের নিয়োগ করা হবে। এমন আশাতেই বসে ছিলেন তাঁরা। কিন্তু বেশ কিছুদিন হয়ে গেলেও তাঁদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি বলে দাবি তাঁদের। সংগঠনের তরফেও পুরসভার সাথে যোগাযোগ করা হলেও মেলেনি কোনও সদুত্তর। এরপর থেকেই সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে বিদ্যুৎ কর্মীরা। চাকরিটা আছে তো? না হলে কোথায় যাবেন পরিবার নিয়ে? কে দেবে কাজ। প্রায় ২৩ বছর চাকরি করার পর কী হঠাৎ করেই কর্মহীন হয়ে যেতে হবে?
advertisement
সিটু নেতা সৌমজিৎ রজক বলেন, ‘‘এই বিদ্যুৎ কর্মীরা এতদিন কাজ করছে তাঁদের কী হবে? সরকারের সিদ্ধান্ত কে পার্ক চালাবে? কিন্তু এটা তো ঠিক দুটোই ববি হাকিমের হাতে। তাঁর ডান হাত থেকে বাঁ হাতে গেল পার্কটি। আমরা পুরো বিষয়টাই জানিয়েছি। কর্মীদের পাশাপাশি সমস্যা তো এই ঐতিহ্যশালী পার্কেরও হবে। আলো জ্বালানো, পাম্প চালানো সবই এরা করে থাকেন। যদিও পুরসভার তরফেই কোনও উদ্যোগ নেই।”
কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবাশীষ কুমার জানিয়েছেন “পার্কের ৯৫ শতাংশ কর্মীকে পুরনো শর্তে নিয়োগ করেছে কলকাতা পুরসভা। বাকিদের এখন দরকার নেই। ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে নিয়োগ করা হবে।” এর ফলে চিন্তা আরও বেড়েছে পার্কের বিদ্যুৎ কর্মীদের।
পার্কের প্রথম দিন থেকে কাজ করে আসছেন বিদ্যুৎ কর্মী জয়ন্ত মজুমদার। তিনি বলেন, “২৩ বছর ধরে পার্কের সব কাজ নিষ্ঠার সঙ্গে করে আসছি। এখনও করছি। এই মূহুর্তে কাজ চলে গেলে কী করবো জানি না। পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে। আমরা চাই এখানেই আমাদের কাজ বহাল থাকুক।”
একটা সময় মিলেনিয়াম পার্কে জৌলুশ ছিলো। আলো, ঝরনা দোকানপাট, দর্শনার্থীদের যাতায়াতে গমগম করতো পার্ক। কেএমডিএ-র হাতে থাকা পার্কে বেশ কয়েকটা রাইডও চলতো। কিন্তু এখন পরিস্থিতি আলাদা। করোনা কালে বেশকিছু দিন পর পার্ক খুললেও আগের অবস্থা আর ফিরে আসেনি। বন্ধ হয়ে রয়েছে স্টলগুলো। অযত্নে পড়ে নষ্ট হচ্ছে রাইডগুলো। এই নিয়ে দর্শকদের মধ্যেও ক্ষোভ রয়েছে। বাচ্চাদের রাইড চড়াতে নিয়ে এসে খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে তাঁদের৷
UJJAL ROY