উত্তর কলকাতার একাধিক জায়গায় মেয়রকে কুর্ণিশ জানিয়ে শনিবারের ব্যানারে লেখা, দক্ষতার সঙ্গে কলকাতা পুরসভার এক বছরের মধ্যে বিশ্বের দরবারে পৌছে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিমকে ধন্যবাদ। পাশাপাশি ফিরহাদ হাকিমের প্রশাসনিক দক্ষতাকেও কুর্ণিশ জানিয়ে নাগরিক মঞ্চের দ্বারা প্রচারিত এই ব্যানারের শেষ অংশে বড় বড় করে লেখা ববিদাকে আবার চাই ববিদাকে আবার চাই ।
advertisement
আর এই ব্যানার নজরে আসতে ফের শুরু রাজনৈতিক তর্জা। কলকাতাকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়া নিয়ে ব্যানারে যে ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ফিরহাদ হাকিমকে কুর্ণিশ জানানো হয়েছে তাতে বিজেপির নিশানায় শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
রাজ্য বিজেপির তরফে সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু তৃণমূলের সমর্থনে ব্যানার প্রসঙ্গে তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করলেন। সায়ন্তনবাবুর কথায়, 'যেভাবে দলীয় অনুগামীরা উন্নয়নের ঢাক ঢোল বাজাতে শুরু করেছেন তা থেকেই স্পষ্ট ওঁরা নির্বাচনের মুখে কতটা ভীত হয়ে রয়েছেন। শাসকদলকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করে তিনি এও বলেন, যেভাবে ব্যানারে কলকাতাকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার কথা লেখা হয়েছে তা আসলে ডেঙ্গির প্রকোপ, অনুন্নয়ন ,নেতা তথা কাউন্সিলরদের তোলাবাজির নিরিখে লেখা হয়েছে। বিজেপি রাজ্য সম্পাদকের দাবি, কাউন্সিলরদের বাড়ি গেলেই টের পাওয়া যাবে গত কয়েক বছরে কত পরিমাণ সম্পত্তির পরিমাণ বাড়িয়েছে ওরা ।
মুখ্যমন্ত্রী তথা দলীয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও খোঁচা দিতে ছাড়েননি সায়ন্তন বসু। বললেন, 'ওঁর কলকাতাকে লন্ডন বানানোর স্বপ্ন বদলে বর্তমানে রাজ্যের সংখ্যালঘুদের একাংশকে উনি জামাই আদরে রেখে কলকাতা তথা রাজ্যকে পাকিস্তান, লাহোরে পরিণত করেছেন । মানুষ সব দেখছে, বুঝছে। আগামী নির্বাচনে যোগ্য জবাব পেয়ে যাবেন উনি। তাই যতই বিশ্বের দরবারে উন্নয়নকে সামনে রেখে কলকাতা তথা রাজ্যকে তুলে ধরার দাবি করে ব্যানার প্রচার চালাক না কেন, তাঁর অনুগামীরা আসন্ন নির্বাচনে স্পষ্ট হয়ে যাবে মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে নেই।'
যদিও বিজেপি সম্পাদকের মন্তব্যকে আমল দিতে রাজি নয় শাসক দল । তারা শুধু বলে, ভোট মিটলেই বোঝা যাবে নাগরিক সমাজ কাদের সঙ্গে রয়েছে। শুক্রবার সকালে দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাটে একটি পোস্টারে দেখা যায় শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ছবি, পাশে বিজেপির দলীয় প্রতীক। কে বা কারা এই পোস্টার দিল তা জানা না গেলেও ব্যানারের নীচে লেখা ছিল কলকাতা নাগরিক বৃন্দ। এতেই শুরু হয় হাজারো প্রশ্ন, দলের মধ্যে ও বাইরে উঠতে শুরু করে বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রশ্ন। মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধান, এবার ব্যানার উত্তর কলকাতায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ফিরহাদ হাকিমকে ধন্যবাদ জানিয়ে। সব মিলিয়ে বলা যায় , কলকাতা পুরসভার ভোটের নির্ঘণ্ট এখনও প্রকাশ না হলেও যুযুধান দু'পক্ষের মধ্যে ব্যানার নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে।
VENKATESWAR LAHIRI