যদি হাওড়া স্টেশনের ফুড প্লাজার কথাই ধরে নেওয়া যায় তাহলে প্রায় ২৭৫ জন বসে ও দাঁড়িয়ে খাবার খেতে পারেন৷ চা, কফি, ফ্রুট জুস থেকে শুরু করে ফিস ফ্রাই, বিরিয়ানি বা ইডলি-ধোসা সবটাই মেলে এখানে। কিন্তু মার্চ মাস থেকে সেই ফুড প্লাজা বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। বাসন উল্টে রাখা। ওভেনে বহুদিন না ব্যবহার করার চিহ্ন স্পষ্ট। খাদ্যের তালিকায় ধুলো জমেছে। শুধু জল, কোল্ড ড্রিংক আর চিপস, বিস্কুট ভেন্ডার হুইলে বিক্রি করতে পারছে ফুড প্লাজা। স্টেশনের এই সমস্ত ফুড প্লাজা নিয়ন্ত্রণ করে আই আর সি টি সি। চলতি মাসে তারা ফুড প্লাজা খুলে রাখার অনুমতি দিয়েছে। প্রতিদিন ২০% লাইসেন্স ফি দিয়ে। এছাড়া বসে বা দাঁড়িয়ে ফুড প্লাজায় খাওয়া যাবে না। খাবার নিয়ে চলে যেতে হবে। এই পদ্ধতিতে ফুড প্লাজা চালানো অলাভজনক বলে জানিয়েছে ফুড প্লাজার মালিক।
advertisement
হাওড়া ফুড প্লাজার দায়িত্ব শঙ্কর নাগের হাতে। তিনি জানাচ্ছেন, "বছরের শুরুতেই ছয় কোটি টাকা দিয়েছি ফুড প্লাজা চালাতে। এখন যদি আবার প্রতিদিন ৩০ হাজার করে দিতে হয়, তাহলে আমাদের পক্ষে চালানো মুশকিল। মাসে শুধু ফুড প্লাজা খুলে রাখতেই যদি ৯ লাখ ৩০ হাজার দিতে হয় তাহলে আমাদের যে পরিমাণ টাকার বিক্রি করতে হবে তা এখন সম্ভব নয়। কারণ লোকাল ট্রেন চলছে না।" তাদের মতে হাওড়া স্টেশনের মূল অসুবিধা হল, যাত্রীদের ঢোকা-বেরনোর জন্যে স্টেশনে যে রাস্তা নির্দিষ্ট করা হয়েছে সেখান থেকে ফুড প্লাজা অবধি আসতে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে খাবার বিক্রি হবার সুযোগ কম। এই অসুবিধার কথা মেনে নিচ্ছে আই আর সি টি সি।
সংস্থার গ্রুপ জেনারেল ম্যানেজার দেবাশীষ চন্দ্র জানিয়েছেন, "আমরা রেলকে এই ব্যপারে বলেছি। আগামী কয়েকদিনে আরও কিছু ট্রেন চালু হবে। ফলে যাত্রীদের আনাগোনা বাড়বে। তাদের খাওয়ানোর জন্যে যাতে ফুড প্লাজা অবধি যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।" ফুড প্লাজার কর্মীদের অবশ্য বক্তব্য, বাইরে রেস্টুরেন্টে বসে যদি খাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়, তাহলে ফুড প্লাজায় কেন বসে খাওয়া যাবে না। ফুড প্লাজা বন্ধ থাকায় যে বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে তারা তাতে আগামী দিনে এর প্রভাব পড়তে পারে কর্মীদের ওপরে। কাঁটছাঁট হতে পারে কর্মী সংখ্যায়।
তবে এই জটিলতার মধ্যে ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন যাত্রীরা। এমনই এক যাত্রী বিজয় সরকার জানাচ্ছেন, "এখান থেকেই খাবার কিনতাম৷ স্টেশনে এসে দেখছি বন্ধ এটি। আমি আসাম যাব এবার কোথায় খাবার পাব তাই তো বুঝতে পারছি না।" একই ধরণের অভিযোগ দিলীপ মন্ডলের। তিনি জানাচ্ছেন, "দূরপাল্লার ট্রেনে যাওয়ার জন্যে সবাই স্টেশনে এসেই খাবার কেনেন। এখন সেটাও মিলছে না। ফলে আমাদের অসুবিধা চূড়ান্ত।" এই দুইয়ের দ্বন্দের মধ্যে একদিকে ক্ষতি ফুড প্লাজার৷ অন্যদিকে সমস্যায় যাত্রীরাও।