ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতায় গল্ফ গ্রিন থানা এলাকার আজাদগড়ে। গত ৩১ জুলাই দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ দীপঙ্কর সাহা নামে এক যুবককে গল্ফ গ্রিন থানার কনস্টেবল তৈমুর আলি এবং সিভিক ভলেন্টিয়ার আফতাব ডেকে নিয়ে যায়। সেই সময় দীপঙ্কর এবং দীপঙ্করের মা ডাকার কারণ জিজ্ঞাসা করলে ওই পুলিশকর্মীরা কিছু না জানিয়ে তাঁকে নিয়ে চলে যায়। দীপঙ্করের পরিবারের অভিযোগ, দুপুর বেলা ডেকে নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ থানায় না নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়েছে তাঁকে। অবশেষে সাব-ইন্সপেক্টর তামাং, তৈমুর এবং আফতাব তিনজন অমানুষিক মারধর করে দীপঙ্করকে, এমনটাই অভিযোগ।
advertisement
পরিবারের দাবি, দীপঙ্কর তাতেই খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাড়ির লোক তার শরীরে মারের গভীর ক্ষতচিহ্ন দেখে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্যোগ নেয়। যেহেতু গরিব পরিবার, তামাং এবং অন্যান্য পুলিশেরা দীপঙ্করকে ভয় দেখিয়েছিল বলে অভিযোগ। যদি বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায় এলাকায়। তাহলে অনেক বড় মামলা দেবে তার বিরুদ্ধে এবং জীবনে মারারও হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেই ভয়ে দুদিন কাউকে কিছু জানায়নি দীপঙ্কর।
আরও পড়ুন: কেন এমন মারাত্মক ঘটনা ঘটালেন? পুলিশের গাড়িতেই জানিয়ে দিলেন যাদুঘরের সেই জওয়ান
নিজের মতো ওষুধ খেয়ে না সারার পর, দীপঙ্করকে তার দাদা রাজীব এবং মা মিলে প্রথমে বাঙ্গুর হাসপাতাল, তারপর শিশুমঙ্গল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ইমারজেন্সিতে দেখিয়ে ওষুধ নিয়ে চলে আসে। অসুস্থতা আরও বাড়তে থাকে দীপঙ্করের। ৪ অগাস্ট আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে যায় বাড়ির লোক। সেখানেই মৃত্যু হয় দীপঙ্করের।
দীপঙ্করের মা প্রতিমা সাহা কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং গল্ফগ্রিন থানার ওসির কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগ পেয়ে সাব ইন্সপেক্টর তামাং ও কনস্টেবল তৈমুর আলীকে ক্লোজ করেছে। সিভিক ভলেন্টিয়ার আফতাবকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে মারধরের কথা অস্বীকার করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, দীপঙ্করকে কিছুক্ষণের জন্য থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। তারপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাকে কোনও ভাবেই মারধর করেনি পুলিশ।
প্রশ্ন, বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসা হল কেন? কেন নোটিশ ছাড়া ডাকা হল। দীপঙ্করের বিরুদ্ধে এর আগেও চুরির অভিযোগ রয়েছে। তাতে গ্রেফতার হয়েছিল সে। কিন্তু এবারের ঘটনার সঙ্গে আগের কোনও কিছুই মেলাতে পারছে না দীপঙ্করের পরিবার।