ভবানীপুর উপনির্বাচনে (Bhabanipur By Election) তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য ছিল, এই ভোট আসলে ২০২৪ এর আগে দেশের মানুষের কাছে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করার ভোট। আজ সেই ছয়জনের হাসি বলে দিচ্ছে লড়াই ২০২৪ এর জন্যে প্রস্তুত তাঁরা।এই যোদ্ধাদের প্রথম নাম হল ফিরহাদ হাকিম। রাজ্যের দুই দফতরের মন্ত্রী, বিধায়ক, কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারম্যান। এত কিছু সামলেও গত এক মাস ধরে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি ভবানীপুরের ভোটে প্রচার চালিয়ে গিয়েছেন। সকালে করেছেন ডোর টু ডোর। বিকেলে করেছেন সভা। কিন্তু লড়াইয়ের মঞ্চ ছেড়ে যাননি মমতার 'ববি'। এদিন ফল দেখে স্বাভাবিকভাবেই খুশি চেতলার ববি। তিনি জানাচ্ছেন, এটা যতটা ছিল মমতার ভোট। এটা ঠিক ততটাই ছিল আমার ভোট। আমরা যে কেউ মুখিয়ে থাকি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোটে প্রচারে থাকতে পারব জেনে৷ অনেক কুৎসা হয়েছে। অনেক মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। কেন্দ্র থেকে একাধিক নেতা নিয়ে এসে প্রচার চালিয়ে গেছেন। কিন্তু ভবানীপুরের মানুষ জানে মমতা বন্দোপাধ্যায় তাঁদের ঘরের মেয়ে।
advertisement
ভবানীপুরের ঘরের মেয়ের এই ভোটে অন্যতম অবদান যার তিনি হলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। নিজের জেতা আসন মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জন্যে ছেড়ে তিনি খড়দহ থেকে লড়াই করছেন। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ দলের সব শীর্ষ নেতারা। এদিন মমতার মন্ত্রীসভার কৃষিমন্ত্রী বলছেন, "আমার আজ সবচেয়ে বেশি আনন্দ। কারণ আমি মমতাকে ভোট দিয়েছি। আমরা সবাই আছি। তবে মমতা ঘরের মেয়ে। ভবানীপুর ঘরের মেয়েকেই কাছে টেনে নিল।"
আরও পড়ুন-খেলা হল ভবানীপুরেও, ২০১১-র রেকর্ড ভেঙে মসনদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় LIVE
ভবানীপুরের ভোটের প্রচারে ব্যস্ত থেকেছেন আর এক মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দলের মহাসচিব জানাচ্ছেন, "ভবানীপুরের মানুষ আর একবার মুখের ওপর জবাব দিয়ে দিল। বাংলা যে বহিরাগতদের নয়। বাংলা যে কুৎসা, মিথ্যা কথা, অশান্তি সহ্য করতে পারে না। সেটা এই নির্বাচন বুঝিয়ে দিল।"এই ভোটে আর এক জন মন্ত্রী তিনি নিজেও পাশের কেন্দ্র থেকে এসে প্রতিদিন চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন। ভোটের প্রচারে ব্যস্ত থেকেছেন।
ডোর টু ডোর করেছেন, বহুতলে গিয়ে প্রচার সেরেছেন আবার মিছিল করেছেন। তিনি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এদিন রেজাল্ট আউটের পরে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলছেন, "যারা রাজনীতি বোঝে না। যাদের আইডিয়া নেই বাংলার ভোট নিয়ে। যারা মানুষের পাশে থাকে না। তারা বুঝবে কি করে? আজ যে জবাব পেল এটাই আগামী দিনে আমাদের বুঝিয়ে দেবে।"
ভবানীপুরের সব চেয়ে নজরে থাকা ওয়ার্ড ছিল ৭০। এই ওয়ার্ডকে বলা হত মিনি গুজরাত। কারণ প্রচুর গুজরাতের মানুষ এখানে থাকেন। আর এখানেই লাগাতার প্রচার চালিয়েছেন বিধায়ক দেবাশিষ কুমার। এই রেজাল্টে তারও ভূমিকা আছে। তিনি বলছেন, "মানুষ জানেন মমতা বন্দোপাধ্যায়কে। আমরা তার সৈনিক। মানুষকে শুধু আমরা বুঝিয়েছি বিপদ কোথায়। আর মানুষ জানেন, চেনেন মমতা বন্দোপাধ্যায়কে। ফলে বিজেপির এই হার দেওয়াল লিখন ছিল।"
লক্ষ্যে অবিচল থেকে নির্বাচনী দায়িত্ব সামলেছেন বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়। এদিন রেজাল্ট আউটের পরে চোখে জল তার। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন তিনি৷ এদিন শুধু বলছেন, "আমরা করে দেখিয়েছি। এবার ২০২৪ সালে দেখিয়ে দেব।"