তৃণমূলের অভাবনীয় জয়ের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা জানিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় লেখেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছি। কাল সন্ধ্যে সাতটায় মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনে আসবেন দেখা করতে।' সেই রাজভবন যাত্রা সরকারের গড়ার দাবি জানাতেই।
নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi), অমিত শাহ (Amit Shah), জেপি নাড্ডা, যোগী আদিত্যনাথ, শিবরাজ সিং চৌহান, বিপ্লব দেব ছাড়াও প্রায় গোটা দেশের বিজেপি নেতৃত্বকে বাংলার প্রচারে আনা হয়েঠিল। একাধিক তারকা প্রচারক এনেও বাংলায় তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্কে থাবা বসাতে পারল না বিজেপি। ভাঙা পায়েই ‘খেলা’ দেখালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অমিত শাহ যেখানে বারবার জোরের সঙ্গে দাবি করছিলেন দু’শোর বেশি আসন নিয়ে বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় আসবে, সেখানে গেরুয়া শিবিরের ঝুলিতে এল সাকুল্যে ৭৬টি আসন। নজির গড়ে বাংলার শাসকদল ভোট পেল ৪৮ শতাংশের বেশি।
আসলে একদিকে যেমন মোদি-শাহরা, অন্যদিকে রাজ্যের ২৯৪ আসনে প্রার্থী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের ভোট প্রচারের প্রতিটি সভাতেই মমতা নিয়ম করে বলেছেন, 'আমিই ২৯৪ কেন্দ্রের প্রার্থী। আমাকে ভোট দেবেন তো?' আসলে স্থানীয় স্তরে অনেক প্রার্থীর বিরুদ্ধেই প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা কাজ করছিল। দুর্নীতির অভিযোগও ছিল ভুরিভুরি। স্থানীয় নেতাদের সেই ভাবমূর্তি যাতে জয়ের পথে বাধা না হয়, সেই কারণেই নিজেকে সামনে এনেছিলেন মমতা। তাঁর ব্যক্তিগত ভাবমূর্তিকে কাজে লাগিয়েই ফের বাংলায় ঝড় তুললেন তৃণমূল নেত্রী। তার বিরুদ্ধে যতই নরেন্দ্র মোদিকে যতই সামনে আনুক বিজেপি, মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা স্পষ্ট করতে পারেনি বিজেপি। অর্থাৎ, মমতার সমকক্ষ কাউকে দাঁড় করাতে পারেনি তিনি। ভোটের চূড়ান্ত ফলাফলে সেই ব্র্যান্ড মমতা এবং বিজেপির মুখের অভাবেই জয়ের ফসল ঘরে তুলল তৃণমূল।