মে মাসের ১৭ তারিখ নারদ মামলায় তৃণমূল কংগ্রেসের তিন বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), মদন মিত্র (Madan Mitra), সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee) ও কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে (Sovon Chatterjee) গ্রেফতার করে সিবিআই। এরপরেই তড়িঘড়ি নিজাম প্যালেসে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। সেখানে প্রায় ৬ ঘণ্টা ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দপ্তরের বাইরে ভিড় এত বেড়ে যায় যে বাড়তি বাহিনী মোতায়েন করে সেই ভিড় সামলাতে হয়। এই ঘটনাকে খুব একটা ভাল চোখে দেখেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাদের অভিযোগ, জনপ্রিয় নেতাদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে চাপ তৈরি করছে দল। সিবিআই আধিকারিকদের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
advertisement
এরপরেই এই মামলাকে কেন্দ্র করে তুঙ্গে পৌঁছয় কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মামলায় প্রভাব খাটাতে পারেন অভিযোগ তুলে নারদ মামলাকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। মুখ্যমন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রীকে মামলায় পক্ষও করেছে তারা। কিন্তু হাই কোর্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মলয় ঘটকের জবাবি হলফনামা গ্রহণ করেনি।
সূত্রের খবর, এই মামলায় নিয়ম মেনে মুখ্যমন্ত্রীকে হলফনামা পেশের নির্দেশ দেয় হাইকোর্টের ৫ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হলফনামা জমা দেন নির্দিষ্ট সময়ের পরে। এর পরই সেই হলফনামা গ্রহণ করা হবে না বলে জানিয়ে দেয় আদালত। এই সিদ্ধান্তের ফলে মামলায় পক্ষ হওয়া সত্বেও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য না শুনেই রায় দেবে আদালত। এই মামলার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না হলেও সিবিআই পক্ষ করায় আদালতে নিজের বক্তব্য রাখার সুযোগ পেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সময়ে হলফনামা জমা না দিতে পারায় সেই সুযোগ হারান তিনি।
তাঁর হলফনামা গ্রহণ না করার হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মমতা। সম্ভবত মঙ্গলবার শুনানি হবে সেই মামলার। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তা ও অনিরুদ্ধ বসুর এজলাসে ওই মামলগুলির শুনানি হবে। এবং এই গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের রাজ্য বনাম কেন্দ্র ঠাণ্ডা লড়াই যে নতুন মাত্রা পেতে চলেছে সে কথা বলাই বাহুল্য।