সুব্রত মুখোপাধ্যায় ছিলেন একডালিয়া এভারগ্রিনের দুর্গা পুজোর সভাপতি৷ এ দিন শারদ সম্মান প্রদান অনুষ্ঠানে গিয়ে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কথা মনে পড়ে যায় মুখ্যমন্ত্রীর৷ মমতা বলেন, 'আজকে একজনের কথা আমার খূব মনে পড়ছে৷ যে মানুষটা সবসময় উপস্থিত থাকতেন, সেই সুব্রত মুখোপাধ্যায় আজ নেই৷ আমি খালি ভাবছি, এভারগ্রিনের পুজোটা এবার কার হাতে যাবে?' সুব্রত মুখোপাধ্যায় কতটা পুজো অন্ত প্রাণ ছিলেন, তা বোঝাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'পুজোর ১৫ দিন আগে থেকে আমার সঙ্গে ঝগড়া করতেন, বলতেন কীরে কবে উদ্বোধনের ডেট দিবি? আর বলতেন তোকে স্তোত্রটা বলতে হবে৷'
advertisement
আরও পড়ুন: 'মমতা গরিবের মেয়ে, ওকে উঠতে দে!' সুব্রতর স্মরণে স্মৃতির ঝাঁপি খুললেন পার্থ
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'মানুষ জন্মালে মৃত্যু হবেই৷ কিন্তু সময়টা গুরুত্বপূর্ণ৷ সুব্রতার মৃত্যুর বয়স, সময় হয়নি৷ ভাল থাকতে থাকতে চলে গেলেন৷ এই জন্য আমাদের শোকটা বেশি৷'
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু যে বাংলার রাজনীতি এবং প্রশাসনিক স্তরেও বড় ক্ষতি, তা দলমত নির্বিশেষে অনেকেই স্বীকার করছেন৷ প্রয়াত পঞ্চায়েতমন্ত্রীর শূন্যতা পূরণও সম্ভব নয়৷ সুব্রত মুখোপাধ্যায় মানেই সদাহাস্য, তীক্ষ্ণ রাজনৈতিক বোধ ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন রাজনীতিক৷ মুখ্যমন্ত্রীও এ দিন বক্তব্য শেষ করতে গিয়ে বলেন, 'আপনাদের সবার সঙ্গে আমার আবার কোথাও না কোথাও দেখা হবে৷ শুধু সুব্রতদা থাকবেন না৷ কিন্তু সুব্রত মুখোপাধ্যায় এভারগ্রিন ছিলেন৷ তাই এভারগ্রিনের মতোই সুব্রতদা চিরকাল আমাদের হৃদয়ে থেকে যাবেন৷'
আরও পড়ুন: 'চলে গেলেন আমাদের উত্তমকুমার', স্মৃতি-গল্পে-অভিযানে বিধানসভায় সুব্রত-স্মরণ
ছাত্র রাজনীতি থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থানের নেপথ্যে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের অবদান সুবিদিত৷ শোনা যায়, যাদবপুর থেকে প্রথমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কংগ্রেসের টিকিট দেওয়ার পিছনে সুব্রতর কৃতিত্ব ছিল৷ পরবর্তী সময়ে সুযোগ পেয়ে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে প্রাপ্য সম্মান ফিরিয়ে দিয়েছেন মমতাও৷ গত দশ বছর ধরে রাজ্য মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷ প্রশাসনিক সঙ্কট হোক বা দলীয় রাজনীতির জটিল অঙ্ক, সুব্রতর মূল্যবান পরামর্শের বিকল্প পাওয়া মুশকিল৷ স্বভাবতই প্রিয় সুব্রতদার অভাব সবদিক দিয়েই অনুভব করছেন মুখ্যমন্ত্রী৷