নাগরিকত্ব সংশোধিত আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে ৷ তারই মাঝে নাগরিকত্ব নীতি নিয়ে বিজেপি সরকারকে চড়া সুরে আক্রমণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৷ তিনি বলেন, ‘মানুষে মানুষে লড়াই বাধানো হচ্ছে ৷ বিভেদের রাজনীতি করছে বিজেপি ৷ আমরা সকলেই ভারতের নাগরিক ৷ কারও দয়ায় এই দেশে থাকি না ৷ কেন নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে ৷ এতবছর পর কেন প্রমাণ দিতে হবে ৷’
advertisement
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় রণংদেহী মমতা। বারবার তাঁর হুংকার, এ রাজ্যে এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করতে দেবেন না। বৃহস্পতিবার, এক ধাপ এগিয়ে, নরেন্দ্র মোদির উপর আরও চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করেন মমতা। দাবি তোলেন, রাষ্ট্রসংঘের তত্ত্বাবধানে গণভোটের।
তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘সিএবি, এনআরসির উপর সারা ভারতে গণভোট হয়ে যাক। ইউনাইটেড নেশনস করবে। নিরপেক্ষ সংগঠন হিউম্যান রাইটস থাকবে। তৃণমূলও থাকবে না। বিজেপিও থাকবে না। কোনও হিন্দু-মুসলিমও থাকার দরকার নেই। চাই ইউনাইটেড নেশনস গণভোট করুক।’ মমতার দাবি, সংখ্যার জোরে সংসদে সিএবি পাস করিয়েছে মোদি সরকার। এ দিন, নরেন্দ্র মোদির নাম না করে তৃণমূলনেত্রীর হুঁশিয়ারি, গণভোটে হেরে গেলে পদত্যাগ করুন।
মমতার গণভোট-মন্তব্যের বিরোধিতায় বিজেপি নেতাদের আগেই আসরে নেমে পড়েন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ট্যুইট করে প্রথমে মুখ্যমন্ত্রীকে গণভোটের মন্তব্য প্রত্যাহারের আর্জি জানান। এর কিছুক্ষণ পরেই আবার ট্যুইট। সেখানে উস্কে দেন জাতীয়তাবাদের আবেগ। লেখেন, ‘জাতীয়তাবাদ নিয়ে আপস করা উচিত নয়। সবার আগে দেশ। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে আমি উদ্বিগ্ন, ব্যথিত ৷’
দিল্লি, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদে মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে দিল্লির একটা বড় অংশে ইন্টারনেট বন্ধ৷ বেঙ্গালুরুতে ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহকে টেনে হিঁচড়ে আটক করেছে পুলিশ৷ এছাড়াও বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বিরোধী দলের নেতাদের আটক করা হয়েছে৷ প্রতিবাদকারীদের পাশে দাঁড়িয়ে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
ট্যুইটারে মমতা লেখেন, 'ছাত্রদের ভয় পাচ্ছে সরকার৷ নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদীরে ভয় পাচ্ছে কেন্দ্র৷ রামচন্দ্র গুহকে ভয় পাচ্ছে কেন্দ্র৷ ভারতের অন্যতম পণ্ডিত ইতিহাসবিদ যাতে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ না-খোলেন, তার জন্য ভয় পাচ্ছে কেন্দ্র৷ রামচন্দ্র গুহর মতো ইতিহাসবিদকে আটকের তীব্র নিন্দা করছি৷ যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে৷'