সেই খবর পেয়েই মেয়ো রোডে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছনোর পরই ঘটনাস্থল ছেডে় ফিরে যান সেনা আধিকারিক এবং জওয়ানরা৷
মেয়ো রোডের আধখোলা মঞ্চে উঠে মমতা বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করে বলেন, ‘আমাদের মাইকের কানেকশন কেটে গিয়েছে, সেনার জন্য আমরা গর্বিত৷ কিন্তু সেনাবাহিনীকে যদি বিজেপির কথায় চলতে হয়, তাহলে সেটা দুর্ভাগ্যজনক৷ এখানে কোথাও রাস্তা বন্ধ করা হয়নি, গাড়ি চলতে অসুবিধা হচ্ছে না৷ শনি-রবিবার এখানে ধর্না কর্মসূচি হয়৷ পুলিশকে বলতে পারত, তাহলে আমরা নিজেরাই মঞ্চ খুলে অন্যত্র সরিয়ে নিতাম৷ প্রায় দুশোর মতো সেনা জওয়ানরা আমাকে দেখে ছুটে পালিয়ে গেল৷ আমি বললাম, পালাচ্ছেন কেন, আপনারা আমাদের বন্ধু৷ আমি সেনাকে দোষ দিচ্ছি না, এটা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, বিজেপির কথায় হয়েছে৷ সেনাকে রাজনৈতিক দলের মঞ্চ, মাইক খুলতে ব্যবহার করা হচ্ছে, সবাই দেখতে পাচ্ছে৷’
advertisement
এই ঘটনার পিছনে বিজেপি রয়েছে বলে অভিযোগ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গতকালই এখানে অনুষ্ঠান হয়েছে৷ পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে পারত, কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে জানাতে পারত৷ তাহলেই আমরা জানতে পারতাম৷ সেনা কিছু করেনি, এর পিছনে ছুপা রুস্তম বিজেপি দল রয়েছে৷ সেনার অপব্যবহার করছে বিজেপি৷ আমি সেনাকে কিছু বলছি না, ওরা দেশের জন্য সবসময় কাজ করে৷ আমরা ডুরান্ড কাপ সহ সেনার সব অনুষ্ঠানে সাহায্য করে৷ এতে সেনাবাহিনীর অসম্মান হচ্ছে৷ আমি এখানে আর কোনও কর্মসূচি করব না৷ আমরা রানি রাসমণি রোডে অনুষ্ঠান করব৷ বিজেপি কিন্তু অনুমতি ছাড়াই রোজ অনুষ্ঠান করছে৷ তাহলে তাদের জন্যও একই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে? এটা অনৈতিক কাজ৷ আমি তো পাঁচ মিনিট দূরেই বসে আছি৷ সব কাজ ছেড়ে আমাকে প্রতিবাদ করতে ছুটে আসতে হল৷ ভাষা সন্ত্রাস চলছে, তার প্রতিবাদ করার অধিকার প্রত্যেকের আছে৷ এটা অসাংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক, ক্ষমতার অপব্যবহার৷ সেনাকে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করছে বিজেপি৷ তারা সীমান্ত, দেশে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে ভাবিত নয়৷ তারা খালি তৃণমূলকে নিয়ে ভাবছে৷’
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মেয়ো রোডে আর এই কর্মসূচি করবে না তৃণমূল কংগ্রেস৷ তার বদলে রানি রাসমণি রোডে প্রতিদিন বাংলা ভাষার উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে প্রতিদিন বিক্ষোভ দেখাবে তৃণমূলের বিভিন্ন সংগঠন৷ সেনাকে অপব্যবহারের অভিযোগে আগামিকাল ব্লকে ব্লকে তৃণমূল বিক্ষোভ দেখাবে বলেও জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, ৩০ এবং ৩১ অগাস্ট ধর্না কর্মসূচির জন্য সেনা বাহিনীর থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নেওয়া হয়েছিল৷ ২০ হাজার টাকা জমাও দেওয়া হয়েছিল দলের পক্ষ থেকে৷ সেনাবাহিনীর কাছে নতুন করে আবেদনের জন্য কথাও বলা হচ্ছিল বলে দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মোদি আর বিজেপি-র অনুমতি নিয়ে আমি কোনও কর্মসূচি করব না৷’