রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও, বেশ কয়েকটি জেলায় এখনও আক্রান্তের সংখ্যা প্রশাসনকে যথেষ্ট চিন্তায় রেখেছে। এমতাবস্থায় সেই সমস্ত জেলাগুলিকে আরও কড়া হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী নদিয়া, হাওড়া, জলপাইগুড়ি, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, কোচবিহার, দার্জিলিংয়ের জেলাশাসকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে করোনা সংক্রমণ রুখতে আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার বার্তা দেন। মমতা বলেন, "যে জেলাগুলিতে প্রত্যেকদিনের দু'শোর বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, সেই জেলাগুলিতে প্রয়োজনে কনটেইনমেন্ট জোন করুন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সেটা করতে হবে। তার জন্য যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার আপনারা নিন। সাত থেকে আটটি জেলাতে এখনও পর্যন্ত প্রত্যেকদিন আক্রান্তের সংখ্যা দু'শোর পেরিয়ে যাচ্ছে। এ গুলো নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।"
advertisement
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এখনই রাজ্যে লোকাল ট্রেন, মেট্রো বা সরকারি- বেসরকারি বাস পরিষেবা চালু হচ্ছে না৷ আগের মতোই চলবে স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেন৷ নতুন নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, আগামী ১৬ জুন থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য খুচরো বাজার সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে৷ অন্যান্য সমস্ত দোকান খোলা থাকবে দুপুর ১২টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত৷ পঞ্চাংশ শতাংশ বসার জায়গা নিয়ে বেলা ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চালু করা যাবে রেস্তোরাঁ এবং পানশালা৷ মোট ধারণ ক্ষমতার তিরিশ শতাংশ ক্রেতার প্রবেশের অনুমতি মানার শর্তে খোলা যাবে শপিং মলের ভিতরে থাকা দোকানপাটও৷ কিন্তু বন্ধই থাকছে সিনেমা হল, মাল্টিপ্লেক্স,জিম, স্পা৷ আগের মতোই বন্ধ থাকছে স্কুল, কলেজ-সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান৷
আগামী বুধবার থেকে ২৫ শতাংশ কর্মী নিয়ে সরকারি এবং বেসরকারি অফিস খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷ তবে বেসরকারি অফিস খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত৷ কর্মীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে হবে অফিস কর্তৃপক্ষকেই৷ প্রতি শিফটে পঞ্চাশ শতাংশ কর্মী নিয়ে আইটি ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলি কাজ শুরু করতে পারবে৷ ভ্যাকসিন পেয়েছেন প্রতিটি ইউনিটে এমন পঞ্চাশ শতাংশ কলাকুশলী এবং শিল্পী নিয়ে শ্যুটিং চালুরও অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷ তবে আগের মতোই রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত অকারণে কেউ বাড়ির বাইরে বেরোত পারবেন না৷ যাঁরা করোনার টিকার দু'টি ডোজই পেয়েছেন, তাঁদের সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত মর্নিং ওয়াক করারও অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷ দর্শক-শূন্য স্টেডিয়ামে খেলাধুলো শুরুর অনুমতিও দেওয়া হয়েছে৷
গত একমাসে কড়া বিধিনিষেধ জারি থাকায় রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে৷ দৈনিক প্রায় ২০ হাজারের থেকে নেমে এখন দৈনিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যা ৫ হাজারের নীচে চলে এসেছে৷ কিন্তু পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এখনই রাশ আলগা করতে রাজি নয় রাজ্য প্রশাসন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'নির্বাচনের সময় রাজ্যে পজিটিভিটি রেট প্রায় ২২ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছিল৷ এখন তা কমে ৬ শতাংশে নেমে এসেছে৷' মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যের প্রায় ২ কোটি মানুষকে এখনও পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয়েছে৷
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়