‘শিক্ষাশ্রী’ প্রকল্পে পঞ্চম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত তফশিলি জাতি, উপজাতিভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের বছরে ৮০০ টাকা স্কলারশিপ দেওয়া হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত তফশিলি জাতিভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের ১ কোটি ৫ লক্ষের বেশি স্কলারশিপ (৮১৪ কোটি টাকার বেশি) দেওয়া হয়েছে। তফশিলি জাতিভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা মূল্যের ৮৭ লক্ষ ৩৩ হাজার প্রি ম্যাট্রিক ও পোস্ট ম্যাট্রিক স্কলারশিপ দেওয়া হয়েছে। তফশিলি জাতিভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের জন্য ৩৪টি গার্লস হস্টেল, ১২ টি বয়েজ হস্টেল, ২৮টি সেন্ট্রাল হস্টেল এবং ৯৭টি আশ্রম হস্টেল চালু করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মোট ৪ লক্ষ ৬৬ হাজার তফশিলি জাতিভুক্ত ছাত্রছাত্রীর জন্য হোস্টেল বাবদ ৩ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
advertisement
‘সবুজসাথী’ প্রকল্পে তফশিলি জাতিভুক্ত ৩৭ লক্ষ ৪৭ হাজার ছাত্রছাত্রীকে সাইকেল দেওয়া হয়েছে। ‘যোগ্যশ্রী’ প্রকল্পে রাজ্যজুড়ে ৫০টি কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে তফশিলি জাতি,উপজাতিভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষার কোচিং দেওয়া হচ্ছে । প্রতি বছর প্রায় ১ হাজার ৭০০ তফশিলি জাতির ছাত্রছাত্রীরা এই সুযোগ পাচ্ছেন। এছাড়াও, প্রতি বছর ১ হাজার ১৫০ জন তফশিলি জাতি, উপজাতির ছাত্রছাত্রীকে অন্যান্য সরকারি চাকরির পরীক্ষার কোচিং দেওয়া হচ্ছে। প্রতি বছর ৭৫০ জন মেধাবী তফশিলি জাতিভুক্ত ছাত্রছাত্রীকে মাধ্যমিক বা সমতুল্য পরীক্ষায় ভাল ফল করার জন্য ‘ডঃ বি আর আম্বেদকর মেধা পুরস্কারের’ অধীনে এককালীন ৫ হাজার টাকা প্রদান করা হচ্ছে।
উচ্চশিক্ষার জন্য তফশিলি জাতি, তপশিলি উপজাতি, অনগ্রসর শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের অত্যন্ত সহজ শর্তে এডুকেশন লোন দেওয়া হচ্ছে। গত ১৪ বছরে ১ হাজার ৩২০ জন তফশিলি জাতিভুক্ত ছাত্রছাত্রীকে এই ঋণ দেওয়া হয়েছে। ২০১১ সাল থেকে প্রায় ১ লক্ষ সাড়ে ১৮ হাজার তফশিলি জাতির যুবক-যুবতীকে স্কিল ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে যার মধ্যে প্রায় ৭১ হাজার জন ইতিমধ্যেই স্বনির্ভর হয়েছেন। আর্থিকভাবে দুর্বল তফশিলি জাতিভুক্ত মানুষকে স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে ঋণ এবং ভর্তুকির মাধ্যমে সহায়তা করা হচ্ছে। গত ১৪ বছরে প্রায় ২ লক্ষ ২২ হাজার তফশিলি জাতিভুক্ত মানুষকে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
২২টি জেলাতে তফশিলি জাতিভুক্ত মানুষ বেশি থাকেন এমন এলাকায় ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৩০টি স্মার্ট ক্লাসরুম এবং ৩৪টি মডেল কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে। ‘তফশিলি বন্ধু’ প্রকল্পে প্রায় ১১ লক্ষ ২৫ হাজারের বেশি মানুষকে মাসে ১ হাজার টাকা বার্ধক্যভাতা দেওয়া হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকার ৬ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। সরকারি প্রকল্পের বিষয়ে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সাড়ে তিনশো ব্লক এবং মিউনিসিপ্যালিটিতে স্থানীয় তফশিলি জাতিভুক্ত সাড়ে তিনশো জন ঢাকী নিয়োগ করা হয়েছে। ‘দুয়ারে সরকার’ ক্যাম্প থেকে ৩২ লক্ষ ৩৭ হাজারের বেশি তফশিলি জাতি শংসাপত্র, ৩৬ হাজার ৪০০-র বেশি শিক্ষাশ্রী স্কলারশিপ এবং প্রায় ৮৫ হাজার ৭০০ তফশিলি বন্ধু পেনশন দেওয়া হয়েছে। তফশিলি জাতিভুক্ত বিভিন্ন শ্রেণির উন্নয়নের জন্য মতুয়া উন্নয়ন বোর্ড, বাউড়ি উন্নয়ন বোর্ড, বাগদি উন্নয়ন বোর্ড, কুড়মি উন্নয়ন বোর্ড, নমঃশূদ্র উন্নয়ন বোর্ড, দলিতবন্ধু উন্নয়ন বোর্ড-সহ ১০টি উন্নয়ন বোর্ড গঠন করা হয়েছে। মোট ১৩৬ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার সবসময় রাজ্যের সব মানুষের পাশে আছে। আমরা জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী-রাজনৈতিক রং নির্বিশেষে সকলের জন্য কাজ করছি।
