শুক্রবার সকাল থেকেই নদিয়ার করিমপুরের একাধিক জায়গায় দৌড়ে বেড়াতে দেখা যায় কৃষ্ণনগরের সাংসদকে। এদিন, পান্নাদেবী কলেজ চত্বরে বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধনে অংশগ্রহণ করেন তিনি। সেখানেই মুখোমুখি হন সংবাদমাধ্যমের৷
‘ঘুষের বদলে প্রশ্ন’ কাণ্ড নিয়ে এখন রীতিমতো সরগরম দিল্লি৷ তার উপরে, গত বৃহস্পতিবার এথিক্স কমিটির ‘সাংসদ পদ খারিজে’র সুপারিশ করার পরে রাজনৈতিক মহলে এখন অন্যতম বড় প্রশ্ন, চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে কি আদৌ টিকিট পাবেন মহুয়া?
advertisement
কৃষ্ণনগরের সাংসদকে এই প্রশ্ন করতেই তাঁর স্পষ্ট উত্তর, ‘‘কেউ কেউ বলছে আমি নাকি টিকিট পাব না। আমি নাকি কৃষ্ণনগরে লড়াই করব না। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, আমি দাঁড়াব ও দ্বিগুণ ভোটে জিতব।’’ প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিপুল মোদি ঝড়ের মাঝেও প্রায় ৭৫ হাজারের বেশি ভোটে কৃষ্ণনগরের লোকসভা আসনে জয়লাভ করেছিলেন মহুয়া।
ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন কাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ মহুয়ার লোকসভার সদস্যপদই এখন প্রশ্নের মুখে। কারণ ইতিমধ্যেই তাঁর সাংসদ পদ বাতিলের সুপারিশ করে দিয়েছে লোকসভার এথিক্স কমিটি। দুদফায় শুনানির পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কমিটির সিংহভাগ সদস্যই মহুয়ার সাংসদ পদ বাতিলের সুপারিশ করেছেন। আপাতত সেই সুপারিশ লোকসভার অধ্যক্ষের বিবেচনাধীন৷ তিনি সম্মতি দিলেই সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হবে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদকে৷
আরও পড়ুন: ‘মহুয়া মৈত্রকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করুন’, ৫০০ পাতার রিপোর্টে সুপারিশ এথিক্স কমিটির
মহুয়ার অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে শুনানির পর যে খসড়া রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছিল, সেই রিপোর্ট নিয়ে নিয়মমাফিক কোনও আলোচনাই করা হয়নি। বরং কমিটির চেয়ারম্যান সরাসরি সেই রিপোর্ট ভোটাভুটির জন্য নিয়ে আসেন। মহুয়ার দাবি, কমিটির সদস্যদের মধ্যেই অনেকেই খসড়া রিপোর্ট নিেয় আলোচনার দাবি জানিয়েছিলেন। তৃণমূল সাংসদের কথায়, কমিটির চেয়ারম্যান দাবি নস্যাৎ করে দিয়ে ভোটাভুটি শুরু করে দেন। গোটা বিষয়টি দু মিনিটের মধ্যে মিটে যায়।
সাংসদ পদ হারানোর আশঙ্কার মধ্যেও মহুয়া পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, সংসদের পরবর্তী অধিবেশনের প্রথম দিনের আগে আমাকে বহিষ্কার করতে পারবে না। একবার ওরা সেটা করুক, তার পর আমরা বুঝে নেব।
মহুয়া এ দিনও দাবি করেছেন, সংসদে তাঁর করা যে ৬১টি প্রশ্ন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে এবং ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে. সেগুলির প্রত্যেকটিই জনস্বার্থে তিনি করেছিলেন৷ তৃণমূল সাংসদ দাবি করেছেন, পৃথিবীর যে কাউকে দিয়ে তিনি প্রশ্ন লিখিয়ে আনতে পারেন৷ নিজের বন্ধু দর্শন হিরানন্দানি বিদেশে থাকাকালীন তিনি তাঁর থেকে সেই সাহায্যটুকুই নিয়েছিলেন৷ মহুয়ার চাঞ্চল্যকর দাবি, ৫০০ পাতার যে রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে তাঁর সাংসদ পদ খারিজের সুপারিশ করা হয়েছে, সেখানে কারও সাক্ষ্য নেই৷ মহুয়ার কথায়, ‘এরা সংসদীয় গণতন্ত্রকে নিয়ে উপহাস করছে৷’ প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার মহুয়ার পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷