মদনের অভিযোগ, এসএসকেএম আর জনগণের হাসপাতাল নেই৷ বরং সেখানে এখন ফূর্তি চলে৷ বাম আমল হলে এসএসকেএমে রোগী ভর্তি করতে তাঁর কোনও অসুবিধা হত না বলেও আক্ষেপ করতে শোনা যায় মদনকে৷ এসএসকেএম হাসপাতাল বয়কটেরও ডাক দেন ক্ষুব্ধ মদন।
আরও পড়ুন অভিষেক সিবিআই দফতরে যাওয়ার আগেই কালীঘাটের কাকুর বাড়িতে ইডি হানা! জল্পনা তুঙ্গে
advertisement
ঘটনার সূত্রপাত দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত এক যুবককে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা নিয়ে৷ ওই যুবককে হাসপাতালে ভর্তির জন্য হাসপাতালের সুপারকে তিনি ফোন করলেও সুপার তাঁর ফোন তোলেননি বলে দাবি করেন মদন৷ বাধ্য হয়ে অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যদের মতো মন্ত্রীদের ফোন করেন মদন মিত্র৷ মন্ত্রীরা তাঁর ফোন তুললেও রাতে হাসপাতালের কোনও আধিকারিকই তাঁর ফোন ধরেননি বলে অভিযোগ মদনের৷
গত বৃহস্পতিবার মাঝরাতে শুভদীপ পাল নামে পেশায় ল্যাব টেকনিশিয়ান এক যুবক পাটুলিতে বাইক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। শুভদীপকে অন্য কোথাও ভর্তি করতে না পেরে তাকে সেই মুহূর্তে ভর্তি করা হয় মল্লিকবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখান থেকে এসএসকেএম ট্রমা কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করার চেষ্টা করে পরিবার। অভিযোগ প্রায় ৫-৬ ঘন্টা অ্যাম্বুলেন্স এ পড়ে থাকলেও তাকে দেখেনি কোনো ডাক্তার। রোগীর দিদি এই হাসপাতাল থেকেই পাশ করা একজন চিকিৎসক। অভিযোগ রোগীর অবস্থার গুরুত্ব বোঝারই চেষ্টা করেননি হাসপাতালে উপস্থিত কোনও চিকিৎসক।
এর পরেই আহত ওই যুবকের পরিজনেরা মদন মিত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ঘটনার কথা শুনে মদন স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের সঙ্গে কথাও বলেন। কিন্তু বেড না থাকলেও, রোগীকে দেখেননি পর্যন্ত কোনও চিকিৎসক। ভর্তি না করলেও রোগীকে অ্যাটেন্ড কেন করবেন না চিকিৎসকরা, এই প্রশ্ন তুলেছিলেন রোগীর পরিজনেরা।
ঘটনা কানে যেতেই হাসপাতালে নিজে এসে উপস্থিত হন তৃণমূল বিধায়ক। কার্যত রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন তিনি। হাসপাতালের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ করতে থাকেন। হাসপাতালে দালাল চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে অভিযোগ করেন কামারহাটির তৃণমূূল বিধায়ক।
অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য্যের মতো মন্ত্রীরা মাঝরাতে ফোন তুললেও, হাসপাতালের কোনও আধিকারিক রাতে ফোন তোলেননি বলে অভিযোগ করেছেন মদন মিত্র। এমন কি, হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে অরূপ বিশ্বাস অথবাা স্বাস্থ্যমন্ত্রী চন্দ্রিমাা ভট্টাচার্য ফোন করেও হাসপাতালের কর্তাদের ফোনে পাননি বলে দাবি করেছেন মদন মিত্র। হাসপাতালে উপস্থিত একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার পদমর্যাদার এক আধিকারিক, অরূপ বিশ্বাসকে ফোনে ভুল তথ্যও দেন বলে অভিযোগ মদন মিত্রের। কার্যত বাধ্য হয়েই নিজের খরচে মল্লিকবাজারের বেসরকারি হাসপাতালে ফের রোগীকে ভর্তি করতে পাঠান মদন মিত্র।
ক্ষুব্ধ মদন বলেন, ‘ছেলেটি ল্যাব টেকনিশিয়ান, তার দিদি এই হাসপাতাল থেকে পাশ করা ডাক্তার, এদের এরকম অবস্থা তাহলে সাধারণ মানুষের কি অবস্থা। বাম আমলে হলে অনায়াসে ভর্তি করতে পারতাম এই রোগীকে। দালাল চক্র সক্রিয়, টাকা দিলে চিকিৎসা হয় এই হাসপাতালে। সে নো টু পিজি। সে নো টু পিজি। জরুরি অবস্থায় চিকিৎসককে স্টেথোস্কোপ নিয়ে বাইরে আসতে হয়, সেখানে রাইফেল নিয়ে পুলিশ আসছে, পুলিশ ভেড়া। এটা হসপিটাল নাকি, ভিতরে সব ফুর্তি করছে।+’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি হাসপাতালের রেফার রোগ ঠেকাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিয়েছেন। গতকাল রাতের পরে ফের একবার কাঠগড়ায় শহরের অন্যতম সেরা সরকারি হাসপাতাল এসএসকেএম।