সিজার হওয়ার পর প্রসূতির কাটা জায়গা সেলাই করার পরও সেই সুতো অনেক সময় কেটে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। এমনকি দু’বার, তিন’বার পর্যন্ত সেলাই করতে হয়েছে, এমনও দেখা গিয়েছে। এখন প্রশ্ন, সরকারি হাসপাতালে সুতো বিভ্রাট কেন? এই ঘটনা তো কোন বেসরকারি নার্সিং হোম কিংবা হাসপাতালের ক্ষেত্রে ঘটে না?
ডাক্তারি ভাষায় সেলাইয়ের সুতোকে বলা হয় ‘ক্যাট গার্ড।’ এই সুতো চার ধরণের হয়, ১) ভিক্রিল ২) প্রলেন ৩) সিল্ক ৪) এথিলন। ‘ভিক্রিল’ দিয়ে সেলাই করার পর, ওটি শরীরের মধ্যে মিশে যায়। ‘প্রোলেন’ নীল রঙের সুতো। এটিও শরীরের সঙ্গে মিলে যায়। ‘সিল্ক’ দেখতে কালো। এটি বাইরে থেকে বোঝা যায়। ঘা শুকিয়ে যাওয়ার পর কাটতে হয়। ‘এথিলন’ অর্থাৎ নাইলনের সুতো । এটিও কাটতে হয়। ঘটনা হল, এখন হাসপাতালে ‘সুচার্স ইন্ডিয়া’-র ক্যাট গার্ড ব্যবহার করা হয়। জনসন কোম্পানী এথিকন বানায়। যার দাম অনেকটা বেশী। যেহেতু হাসপাতাল সাপ্লাই হয়, সেহেতু হাসপাতালের ডাক্তাররা এই ‘সুচার্স ইন্ডিয়া’ ব্যবহার করে। এই সুচার্স ইন্ডিয়ার ক্যাট গার্ড ভালো হয় না বলে ডাক্তাররা এটি ব্যবহার করতে চান না। সরকারি হাসপাতাল ছাড়া, এই ধরনের জিনিস কোথাও তেমন চলে না। যার ফলে জনসন ছাড়া অন্য কিছু রাখতে চান না দোকানদারেরা।
advertisement
সূচার্স ইন্ডিয়ার ‘SN 4242’ ক্যাট গার্ড এর মূল্য ১ টি ১৫৯ টাকার কাছাকাছি। সেটি 70 টাকায় পাওয়া যায় পাইকারি বাজারে। এমনকি নাইলন বা সিল্কের ক্যাট গার্ডের ' দাম কুড়ি মিটার ৬০ টাকা। অনেকের যুক্তি, কলকাতায় ওষুধ থেকে আরম্ভ করে ক্যাট গার্ড সমস্ত কিছুই খুবই নিম্নমানের বিক্রি হয়। ওষুধ, অপারেশনের যন্ত্রপাতি, চিকিৎসার সরঞ্জাম ব্যবসার নামে এ শহরে একটি একটি অশুভ আঁতাত চলছে। যদিও হাসপাতালে সরবরাহ করার সময় ঠিকাদার সংস্থার জিনিসপত্রের মান যাচাই করে নেওয়া হয়। প্রশ্ন তবুও, কেন এমন ধরনের খারাপ নিম্নমানের জিনিসপত্র সরবরাহ হয় হাসপাতালে, যার ফলে একটি ১১ দিনের শিশুর প্রাণ যায়। যে ড্রাগ কন্ট্রোল, এই সমস্ত কিছুর মান পরীক্ষা করে তাদের মধ্যেও ঘুঘুর বাসা রয়েছে বলে অভিযোগ অনেকদিনের। ড্রাগ ইনস্পেক্টরদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ ভুরিভুরি। তাঁরা অশুভ আঁতাতের সঙ্গে যুক্ত, এমনও বলেন কেউ কেউ।
SHANKU SANTRA