#কলকাতা: ‘দিদিকে বলো’-তে সমস্যার কথা জানিয়ে ১০ দিনের মধ্যে সরকারি চাকরি পেলেন বেহালার এক বাসিন্দা ৷ আর পাঁচ জন সাধারণ বাঙালীর মতোই বেহালা সরশুনার বাসিন্দা সুরজিৎ হালদারের জীবনটা কাটছিল । দুধে ভাতে না হলেও ডালে ভাতে। বাবা, মা, স্ত্রী , পুত্রকে নিয়ে টানাটানির মধ্যেই ভরা সংসার। প্রাইভেট ফার্মের সাধারণ কাজ। স্বল্প বেতন, তাতে কী? খুশির ভাটা কখনও পড়েনি হালদার বাড়িতে। জীবনটা যে এক লহমায় থমকে যাবে, তা ঘুণাক্ষরে ভাবেনি কেউ।
advertisement
গত বছর সেপ্টেম্বর মাস, নিজের কাজে নিউ আলিপুর এলাকায় ঘুরছিলেন সুরজিৎ । বিকেল হয়ে আসছিল। আর একটু পরেই বাড়ি ফেরার তাড়া শুরু হবে। কাজটা গোটাবার তাড়া ছিলো সুরজিতের। রাস্তাটা বাঁক ঘুরতেই আচমকা এক গাড়ির ধাক্কা। মূহুর্তেই সব অন্ধকার। সুরজিতের জ্ঞান ফিরল, তখন সে হাসপাতালে।। দুর্ঘটনায় ডান পা গুরুতর জখম। অনেক চিকিৎসার পরেও ঠেকানো গেলো না সংক্রমণ।। এমন অবস্থায় ডান পা বাদ গেলো সুরজিতের। জীবনে নেমে এসেছিল অন্ধকার। কীভাবে নিজের আর পরিবারের দিন চলবে তা নিয়ে ভাবতে গেলেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছিলেন বছর তেইশের সুরজিৎ ।
এর পরই ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডে দিদিকে বল কর্মসূচিতে আসেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। লোকের কাছে জানতে পেরে স্ত্রী সুস্মিতাকে নিয়ে যান সুরজিৎ। সব কথা খুলে বলেন শিক্ষামন্ত্রীকে। সেদিন মৌখিক আশ্বাস দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী । তারপর কেটেছে মাত্র দশ দিন। বৃহস্পতিবার,সকালে বেহালার দফতর থেকে সুরজিতের বাড়িতে পার্থর ফোন যায় ৷ দুপুরে শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে আসতে বলা হয় সুরজিৎকে। সেই মতোনই দুপুরে নাকতলার বাড়ি সস্ত্রীক আসে সুরজিৎ । ভাবতে পারেনি কী ঘটতে চলেছে।
শিক্ষা দফতরের গ্রুপ ডি-র চাকরির নিয়োগ পত্র এদিন সুরজিতের হাতে তুলে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ৷ তখনও তার চোখে বিস্ময় ৷ কিন্তু এপয়েন্টমেন্ট লেটার হাতে পেয়ে, আগাগোড়া পড়ে বিহ্বল হয়ে পড়ে সুরজিৎ ৷ মন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী গ্রুপ ডি-র চাকরি তার হাতের মুঠোয়।। চলতি সপ্তাহেই পাকা সরকারি চাকরীতে যোগদান করবে সুরজিৎ ৷ দম্পতিকে আশীর্বাদ করে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, অসহায় মানুষদের সাহায্যের জন্যই দিদিকে বলো অভিযান ৷ এই মানুষগুলোর হাসিই আমাদের দলের ভরসা।