লন্ডন: প্রয়াত হলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি লর্ড স্বরাজ পল৷ লন্ডনের এক হাসপাতালে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি প্রয়াত হয়েছেন বলে পরিবার সূত্রে খবর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। দিন কয়েক আগে বার্ধ্যক্যজনিত অসুস্থতার কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানেই তিনি প্রয়াত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে ৷ তাঁর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন অনেকেই৷
advertisement
ব্রিটেনের ক্যাপারো গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন স্বরাজ পল। ব্রিটেন, উত্তর আমেরিকা, ভারত, পশ্চিম এশিয়া-সহ বিশ্বের ৪০টি জায়গায় এই সংস্থার কার্যালয় রয়েছে। তাঁর ছেলে আকাশ পল ১৯৯২ সালে সংস্থার সিইও হন।
আরও পড়ুন: ‘আমি চলে যাচ্ছি’, মোদির কলকাতা সফরের দিনই নিজের জায়গা ‘ছেড়ে’ দিলেন দিলীপ ঘোষ! কোথায় গেলেন জানেন, শুনে চমকে যাবেন
তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে ব্রিটেনের সংসদের উচ্চকক্ষে তাঁর সতীর্থ লর্ড ব়্যামি রেঞ্জারও ৷ এক্স হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী মোদি লিখেছেন, “লর্ড স্বরাজ পলের প্রয়াত হওয়ার খবর পেয়ে আমি মর্মাহত ৷ ব্যবসা থেকে শুরু করে সমাজসেবা-সহ নানা ব্যাপারে তাঁর অবদান মনে রাখার মতো ৷ ভারতের সঙ্গে ছিল তাঁর নিবিড় যোগাযোগ ৷ তাঁর সঙ্গে কাটানো সময় আমার স্মৃতিতে থেকে যাবে ৷”
আদতে জলন্ধরের বাসিন্দা স্বরাজ ছয়ের দশকে ছোট মেয়ের ক্যানসরের চিকিৎসা করাতে লন্ডনে গিয়েছিলেন ৷ কিন্তু তাতেও কাজের কাজ হয়নি ৷ মাত্র চার বছর বয়সেই অম্বিকার মৃত্যু হয় ৷ তার পর থেকে ব্রিটেনেই থেকে যান তিনি৷ পরে তৈরি করেন অম্বিকা পল ফাউন্ডেশন নামে একটি সংস্থা ৷ শিশুদের চিকিৎসা-সহ নানা ব্যাপারে সাহায্য করে এই সংস্থা ৷ ২০১৫ সালে ছেলে অঙ্গদ পল এবং ২০২২ সালে স্ত্রী অরুণা পলের মৃত্যুর পরেও একই ধরনের জনহিতৈষী প্রতিষ্ঠান গড়েন ওই শিল্পপতি।
লর্ড স্বরাজ পলের জন্ম ১৯৩১ সালে৷ বাবা পেয়ারে লাল ছিলেন ব্যবসায়ী ৷ স্টিলের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরির কারখানা ছিল তাঁর৷ জলন্ধরে প্রাথমিক পঠনপাঠনের পর উচ্চশিক্ষার জন্য গিয়েছিলেন লাহোরে ৷ সেখানকার ফরমান খ্রিস্টান কলেজে পড়া শেষ করে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চলে যান আমেরিকা ৷ ম্য়াসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে ডিগ্রিও পান ৷ পড়া শেষে দেশে ফিরে এসে বাবার তৈরি এপিজে গ্রুপে দুই ভাই সত্য পল এবং জিৎ পলের সঙ্গে কাজ শুরু করেন ৷ ১৯৬৬ সালে লন্ডনে যাওয়ার বছর দুয়েকে মধ্য়ে পথচলা শুরু করে তাঁর সংস্থা ৷ সেই থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ক্রমশ ব্যবসা বাড়তে থাকে কাপারোর ৷ তবে তারপর ধীরে ধীরে ব্যবসার পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে ৷ এরইমধ্যে ২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর তাঁর বড়ছেলে অঙ্গদ পালের মৃত্যু হয় ৷