#কলকাতা: এই ছুটিতে সবাই মিলে গড়ের মাঠে বসে তার আনন্দ উপভোগ করার মজাই আলাদা। আর গড়ের মাঠ বললেই তার অপর দিকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল কখনওই আমাদের চোখ এড়াতে পারবেনা। ওখানে তো যেতেই হবে, প্রত্যেক ছুটিতে অন্তত একবার । কিন্তু এখানে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হওয়ার আগে কী ছিল জানেন ? অনেক চমকপ্রদ তথ্য রইল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল সম্পর্কে।
advertisement
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল আসলে স্মৃতিসৌধ। রানি ভিক্টোরিয়া ১৯০১ সালে মারা যাওয়ার পরে তাঁর স্মৃতিতে এই মেমোরিয়াল বানানো হয়। সেই সময় ভাইসরয় অফ ইন্ডিয়া এই মেমোরিয়াল বানানোর আর্জি জানান। ১৯০৬ সালে এই মেমোরিয়াল নির্মাণের কাজ শুরু হয় এবং কাজ শেষ হয়ে ১৯২১ সালে। এর ভিতরে রয়েছে ২৫ টি মিউজিয়াম আর এর চারপাশে রয়েছে বিশাল বাগান। যখন এর কাজ শুরু হয়ে তখনও ক্যালকাটা বা আমাদের এখনকার কলকাতা ছিল এই দেশের রাজধানী। তবে পরে দিল্লিকে রাজধানী করা হবে বলে ঠিক করা হয়। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল যে ধাঁচে বানানো, তাতে মনে করা হয়, এতে কিছুটা তাজ মহলের অনুকরণ রয়েছে। তাই এই স্থাপত্যকে ইন্দো সার্সেনিক রিভাইভাল আর্কিটেকচার বলা হয়। তাজ মহলের মতো এই স্থাপত্বেও মাকড়ানা মার্বেল ব্যবহার করা হয়েছিল সেই সময়।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এতটাই বড় যে এর ভিতরে ২৫ টি গ্যালারি আছে। গ্যালারি দেখা শুরু করলে শেষ হওয়া মুশকিল। কী কী গ্যালারি? রয়েছে স্কাল্পচার গ্যালারি, রয়্যাল গ্যালারি, সেন্ট্রাল হল, পোট্রেট গ্যালারি, আর্মস এন্ড আড়মাড় গ্যালারি, ক্যালকাটা গ্যালারি এবং আরও বেশ কিছু গ্যালারি। এ ছাড়াও এখানে সেই সময়ের স্টাম্পস কয়েন এবং ম্যাপের একটি গ্যালারিও আছে যা খুবই ইন্টারেষ্টিং।
এটা জানলেও চমকে যাবেন, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের জমির ওপরেই আগে ছিল প্রেসিডেন্সি কারাগার। পরে এই কারাগার সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় আলিপুরে এবং সেই কারাগারের জমির ওপরেই তৈরী করা হয় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল।
ভারত স্বাধীন হয়েছিল ১৯৪৭ সালে। তার পরে এই দেশে নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন ব্রিটিশ শাসকের যে ভাস্কর্য ছিল, তা তুলে ফেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরকম অনেক ভাস্কর্যই এখন শোভা পায়ে ভিক্টোরিয়া মেমরিয়ালের এই বিশাল বাগানে।
সেই সময়ে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল বানানোর জন্য বিভিন্ন রাজ্য থেকে টাকা জমা করা হয়। লর্ড কার্জনের যে আবেদন বা অনুরোধ ছিল, সেই মতই এই সৌধ বানানোর জন্য সব রাজ্য তাদের সাধ্য মত অর্থ তুলে দেয়। এই স্মৃতিসৌধ বানাতে সেই সময় খরচ হয়েছিল এক কোটি পাঁচ লক্ষ টাকা।
