জোট বিরোধিতার হাওয়া উঠেছে সিপিএমের অন্দরেই। গত ২৯ মেয সিপিএম-এর রাজ্য কমিটির বৈঠক বসে। সেখানে বহু নেতাই ভরাডুবির জন্য কাঠগড়ায় তোলেন আলিমুদ্দিনকে। কেন রাজ্য কমিটিতে আলোচনা না করে আইএসএফ-এর সঙ্গে জোট করা হল তাই নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অধিকাংশ নেতাই সে সময় মত দিয়েছিলেন আইএসএফ এর মতো দলের সঙ্গে গিয়ে দলের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তিতে দাগ লেগেছে। প্রশ্ন থাকলেও সূর্যকান্ত মিশ্র অবশ্য জানিয়ে দিয়েছিলেন আগ বাড়িয়ে জোট ভাঙায় দলের মত নেই।
advertisement
কিন্তু গঙ্গা দিয়ে তারপরও অনেক জল বয়ে গিয়েছে। ফরওয়ার্ড ব্লক যখন স্পষ্টই 'পুঁজিবাদী অর্থনীতির কারিগর' কংগ্রেস এবং 'ধর্মীয় শক্তি' আইএসএফ-এর সঙ্গে সিপিএমের গাঁটছড়া নিয়ে আপত্তি তুলেছে তখন জলঘোলা জোটের অন্দরেও। সম্প্রতি সিপিএম নেতা তথ্য রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের একটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট ঘিরে সিপিএম-কংগ্রেস তরজা চরমে পৌঁছে। ওই পোস্টে ব্যবহৃত 'কংগ্রেসি গুন্ডা' শব্দবন্ধ নিয়ে আপত্তি তোলে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সিপিএম-কে চিঠি দিয়ে বিকাশের এই পোস্টের কড়া নিন্দা করা হয়। পাশাপাশি সিপিএম-এর অবস্থান জানতে চাওয়া হয়। ফলে জোটের ছবিটা যে খুব স্বচ্ছ নয়, এমনটা বলাই যায়।
এদিকে ৫ বাম দল মিলে পেট্রোপণ্যের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার এবং অত্যাবশ্যকীয় জিনিসপত্র ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন ঘোষণা করেছে। রবিবারের দিল্লিতে এই নিয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআই-এর সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা, সারা ভারত ফরওয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস, আরএসপি সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য এবং সিপিআই(এমএল) সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। তাঁরা জানিয়েছেন ১৬ জুন থেকে ৩০ জুন সারা দেশে আন্দোলন চালাবেন বামপন্থীরা। উল্লেখ্য রাজধানীতে সিপিআইএম সিপিআই (এমএল) হাত ধরাধরি করে আন্দোলন করলেও এই রাজ্যে এই দুই বামদলের সম্পর্ক রীতিমতো আদায়-কাঁচকলায়। তার কারণ তৃণমূলকে ক্ষমতায় আনার পিছনে অবদান রয়েছে সিপিআই (এমএল)-এর নো ভোট বিজেপি ক্যাম্পেনিংয়ের। ফলে বিবিধ ঐক্যের ইশারা-ইঙ্গিতের মাঝে সিপিএমের অস্তিত্ব সংকট প্রকট। শেষ পর্যন্ত কোন পথে তারা হাঁটবেন, কাকে রাখবে, কাকে ছাড়বেন, এই প্রশ্ন নিয়েই ফ্রন্ট বৈঠকে তাকিয়ে থাকবে আজ রাজনৈতিক মহল।