আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম প্রধান তিন মুখ হিসেবে পরিচিত চিকিৎসক দেবাশিস হালদার, আসফাকুল্লাহ নাইয়া এবং অনিকেত মাহাতকে ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁদের পছন্দের তালিকায় না থাকা দূরের হাসপাতালে বদলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ৷ গতকালই জানা যায়, সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক হিসেবে দেবাশিসকে বদলি করা হয়েছে গাজোল মহকুমা হাসপাতালে৷ অথচ নিজের এতদিনের কর্মস্থল হাওড়া জেলা হাসপাতালই কাউন্সিলিংয়ে দেবাশিসের প্রথম পছন্দ৷ সেই অর্ডারও বেরিয়েছিল বলে জুনিয়র চিকিৎসক ফ্রন্টের দাবি৷ কিন্তু জয়নিং অর্ডার বেরোতে দেখা যায় দেবাশিসকে গাজোল মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে৷
advertisement
দেবাশিসের বদলি নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ার পরই অনিকেত মাহাত এবং আসফাকুল্লাহ নাইয়াকেও যথাক্রমে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং পুরুলিয়া জেলা হাসপাতালে বদলি করা হয়৷ যদিও তাঁদের পছন্দের তালিকায় এই হাসপাতালগুলি ছিল না৷ আরজি কর হাসপাতালেই কাজ করতে চেয়েছিলেন অনিকেত৷ এই তিন চিকিৎসকের বদলিকে ঘিরে জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্টের অভিযোগ, আরজি কর আন্দোলনে সামনের সারিতে থাকার কারণেই তাঁদের কলকাতা থেকে দূরের হাসপাতালে বদলি করা হয়েছে৷
যদিও চিকিৎসকদের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস৷ তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেন, ‘বদলির চাকরি তো। জনগণের সেবক তো বলছেন। তাহলে মালদহ, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি যেতে কী অসুবিধা। বদলির চাকরি তো ডাক্তারদের। দূরের জেলায় যাবেন না কেন? কীসের আপত্তি। আন্দোলন করেছি বলে দূরের জেলায় পাঠানো হচ্ছে, এই সব আর কতদিন চলবে? অভয়াকে ভাঙিয়ে আর কতভাবে বিভ্রান্ত করা হবে? আজব কথা বলছেন ওনারা। দক্ষ পুলিশ অফিসার, দক্ষ ডাক্তারও বদলি হন। কীসের প্রতিহিংসা? অভয়ার আবেগ ভাঙিয়ে নেতা, টাকা তোলা, পোস্টিং আটকাবেন! এটা কোনও কথা হল। ঘোষিত সরকারপন্থী ডাক্তাররাও তো দূরের জেলায় আছেন। দূরের জেলার মানুষদের পরিষেবা না দেওয়া এটাই কি আসল লক্ষ্য?’
প্রতিহিংসার অভিযোগও উড়িয়ে দিয়ে কুণাল বলেন, ‘সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না। ভিক্টিম কার্ড খেলছে এরা। দূরের জেলায় যেতে কীসের আপত্তি। বাম আমলে কী হত? নিজেরা বদলি নিতেন না?’
বদলির নির্দেশের প্রতিবাদে এ দিন স্বাস্থ্য ভবনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন জুনিয়র চিকিৎসকরা৷ স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গেও কথা বলার চেষ্টা করেন তাঁরা৷ যদিও স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের আবেদনে এখনও সাড়া দেওয়া হয়নি৷ বিকেলে চিকিৎসকদের একটি প্রতিনিধি দল স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার সঙ্গে দেখা করতে স্বাস্থ্য ভবনের ভিতরেও যান৷