যদিও এ দিনের ঘটনায় মুখ্য়মন্ত্রীকেই পাল্টা কটাক্ষ করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতা দাবি করেন, তাঁর সঙ্গে এক মঞ্চে বসবেন না বলেই মঞ্চে ওঠেননি মুখ্য়মন্ত্রী। পাল্টা শুভেন্দু অধিকারীকে জবাব দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। সরকারি অনুষ্ঠানে জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়ার তীব্র সমালোচনা করেছেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ও।
এ দিন হাওড়া স্টেশনের অনুষ্ঠানের পর শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, 'এটা ১৯৫৬ ভোটে হারের জ্বালা। ওকে আমি নন্দীগ্রামে হারিয়েছিলাম। আমার সঙ্গে একই মঞ্চে বসবে না বলেই এটা করেছে। এর আগে কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রীর সামনেও একই নাটক করেছিল।'
advertisement
পাল্টা তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের অভিযোগ, মুখ্য়মন্ত্রীর উদ্দেশে অবমাননাকর মন্তব্য় করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কুণাল ঘোষ বলেন, 'রামের নাম করে অসৌজন্য়, অসভ্য়তা। বিরোধী দলনেতা যে বক্তব্য় রেখেছেন, তা অত্য়ন্ত কুরুচিকর এবং নিম্নমানের। উনি আদৌ বিধায়ক কি না, তা আদালতের বিচারাধীন। মুখ্য়মন্ত্রীকে বিরোধী দলনেতা আপনি নয়, তুমি বলে সম্বোধন করছেন। যে সারাক্ষণ এরকম আমিত্ব করে যায়, তিনি বানর সেনার ডিফেক্টিভ বাঁদর।'
এ দিন হাওড়া রেল স্টেশনে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্য়মন্ত্রীর সামনেই জয় শ্রীরাম স্লোগান ওঠে। যা শুনে দৃশ্য়তই ক্ষুব্ধ হন মুখ্য়মন্ত্রী। অনুষ্ঠান মঞ্চেও ওঠেননি তিনি। মুখ্য়মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে তাঁর কাছে যান রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। এর পরেও মঞ্চে ওঠেননি মমতা। তবে পতাকা নেড়ে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করেন তিনি। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের অবশ্য় দাবি, মুখ্য়মন্ত্রীর অসন্তুষ্ট হওয়ার মতো কিছুই ঘটেনি।
আরও পড়ুন: 'আপনার মা মানে আমার মা', মোদিকে বললেন মমতা! গভীর শোকপ্রকাশ
বিতর্কের অভিযোগ উড়িয়ে রেলমন্ত্রীর দাবি, 'সম্মানের সঙ্গেই আমি মুখ্য়মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তিনি এসেছিলেন বলে তাঁকে ধন্য়বাদ। কর্মীরা উৎসাহে স্লোগান দেন। এতে রেগে যাওয়ার মতো কিছু হয়নি।'
যদিও রেলমন্ত্রীর এই যুক্তি মানতে নারাজ শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, 'আসলে এটাকে অসভ্যতা বলা যায়। ভারতে কোন রাজনৈতিক দল কোনও ধর্মীয় চরিত্র ব্যবহার করেনি। কোন রাজনৈতিক দল ব্যবহার করেনা। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় থেকে এরা ব্যবহার করতে শুরু করল। এমন জায়গায় গেছে যে সরকারি অনুষ্ঠানে স্লোগান দিচ্ছেন। এর আগে ভিক্টোরিয়ায় এমন করেছিল। আজ যখন প্রধানমন্ত্রী শোকসন্তপ্ত তখনও রেলের অনুষ্ঠানে এমন স্লোগান দিলেন। আসলে শিক্ষা-দীক্ষা নেই৷ আমরা যারা রাজনীতি করি তারা বিয়ে, শ্রাদ্ধ, উপনয়ন, অন্নপ্রাশনে গিয়ে রাজনীতির কথা বলিনি। আমার কিশোর কুমারের গান মনে পড়ে গেল, হিপিরা গাঁজা খেয়ে হরেরাম-হরেকৃষ্ণ করছেন৷ আর দেবানন্দ শুভবুদ্ধি দিয়ে গাইছেন, নাম কা বদনাম মত করো।'
মুখ্য়মন্ত্রীর উপস্থিতিতে জয় শ্রীরাম বিতর্ক অবশ্য় এই প্রথম নয়। গত বছর ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে একটি অনুষ্ঠানেও একই ভাবে দর্শকাসন থেকে জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়া হয়। যা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্য়মন্ত্রী। আজ ফের সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল হাওড়া স্টেশনে।