TRENDING:

তিন চালির মঠচৌড়ি-খিচুড়ি নৈবেদ্য, উত্তর কলকাতার দর্জিপাড়া মিত্রবাড়ির পুজো

Last Updated:

তিন চালির মঠচৌড়ি। খিচুড়ি, মাখন, মিছড়ির নৈবেদ্য। রঙ মিলিয়ে ফলের নৈবেদ্য। ঝাড়খিলি পান। ধুতি পড়ে, লাঠি হাতে , খালি পায়ে

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#কলকাতা: তিন চালির মঠচৌড়ি। খিচুড়ি, মাখন, মিছড়ির নৈবেদ্য। রঙ মিলিয়ে ফলের নৈবেদ্য। ঝাড়খিলি পান। ধুতি পড়ে, লাঠি হাতে , খালি পায়ে প্রতিমা বিসর্জন। ঐতিহ্য, বনেদিয়ানা, নিয়ম নীতিতে আজও ব্যতিক্রমী দুশো দশ বছরের দর্জিপাড়ার মিত্র বাড়ির দুর্গা পুজো। উত্তর কলকাতায় নীলমণি মিত্রের বংশের এই পুজোর দায়িত্বে এখন পরিবারের মহিলারা। সাহায্য করেন বাকিরাও। পদ্ম নয়, ১০৮ টি অপরাজিতা ফুলে সন্ধিপুজো হয় মিত্র বাড়ির মেয়ের।
advertisement

১৯ সি, নীলমণি মিত্র স্ট্রিট। দর্জিপাড়া মিত্র বাড়িতে এখন সাজ সাজ রব। ঠাকুরদালানে নতুন রঙের পোচ। জ্বলে উঠেছে ঝাড়বাতি। সপরিবারে মেয়ে আসছে ঘরে। হাতে সময় কম। বাকি অনেক আয়োজন । শুরুটা হয়েছিল কালীপুজো দিয়ে। ২১০ বছর আগে নীলমণি মিত্রের নাতি রাধাকৃষ্ণ মিত্র শুরু করেন দুর্গা পুজো। সেই থেকে মেয়ে রূপেই দুর্গা পূজিতা মিত্র বাড়িতে। বর্তমানে পরিবারের মহিলারাই পুজোর দায়িত্বে। রথের দিন কাঠামো পুজো দিয়ে শুরু। প্রতিমা সাজানোর দায়িত্বে পরিবারের সদস্যরাই। একটা সময়ে শাড়িতে নকশা তুলতে আসতেন নবদ্বীপের শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তাঁর মৃত্যুর পর নিজেরাই সাটিনের কাপড়ে শোলা ও চুমকি বসিয়ে তৈরি করেন সাজ ।

advertisement

তিনচালা প্রতিমা। পিছনে মঠচৌড়ি। দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতীর পিছনে তিনটি অর্ধবৃত্ত। তার উপর মাটির নকশা করা তিনটি মঠের চূড়ার আকৃতির চালি। কোঁচানো ধুতিতে কার্তিক, গণেশ। ঘোড়ামুখো সিংহ। সপরিবারে দুর্গা এবাড়ির পুজোর অন্যতম আকর্ষণ। বনেদী পুজোর নানা রীতি নীতি। কালের নিয়মে আড়ম্বর ফিকে হলেও, জৌলুস কমেনি একটুও। চাল ও ফলের সঙ্গে খিচুড়ি ও মিছড়ি-মাখনের নৈবেদ্য। রান্না করা ভোগের বদলে কাঁচা আনাজে হলুদ মাখিয়ে সাজিয়ে দেওয়া হয় ভোগের থালা। সব শেষে পানের খিলি । পান পাতার শিরা দিয়ে তৈরি খিলি। দেখতে অনেকটা ঝাড়বাতির মত। আদরের নাম ঝাড়খিলি। ফুলের পাপড়ির আকারে চারপশে সাজানো নানা রকম পানমশলা।

advertisement

পাঁচদিন মেয়েকে ঘিরে হইচই। এবার বিদায়ের পালা। ঠাকুরদালান থেকে ছেলেদের কাঁধে চেপে উঠোনে নামেন উমা। শুরু হয় প্রদক্ষিণ, বরণ, সিঁদুর খেলা। মেয়ের শাঁখা পলায় সিঁদুর ছুঁয়ে , মুখে পানের খিলি, মিষ্টি গুঁজে কানে কানে আসছে বছর আবার আসার আরজি। আনন্দের মাঝেও আজও চোখের কোনে জল চিক চিক করে ওঠে অনেেকেরই।

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
বিজয়াতেই ঘরে ঘরে 'টিকা'র প্রস্তুতি! গোর্খাদের এই উৎসব বাঙালির খুব চেনা
আরও দেখুন

ধুতি , লাঠি হাতে , খালি পায়ে বাড়ির পুরুষরা গঙ্গায় বিসর্জন দিতে যান উমাকে। পুজোর কদিন জমজমাট হয়ে ওঠে মিত্রবাড়ি। খাওয়া দাওয়ার বিশাল আয়োজন। জলখাবারে লুচি, আলু, পাঁচ কলাইয়ের তরকারি। দুপুরে ভাত. শুক্তো, ভাজা, চচ্চড়ি, মাছের কালিয়া কিংবা ঝাল, পায়েস। রাতে লুচি, ধোঁকার ডালনা, কচুরি, আলুর দম, কুমড়োর ছক্কা। গানে, গল্পে, আড্ডায়, খাওয়া দাওয়ায় কোথা দিয়ে কেটে যায় পুজোর কটাদিন। ফের এক বছরের অপেক্ষা। শুরু প্রস্তুতিরও।

advertisement

বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
তিন চালির মঠচৌড়ি-খিচুড়ি নৈবেদ্য, উত্তর কলকাতার দর্জিপাড়া মিত্রবাড়ির পুজো