#কলকাতা: জাঁকিয়ে শীত পড়তে এখনো বাকি আরও কটা দিন। তবে ওদের কাছে শীত শীত ভাব দুশ্চিন্তার পক্ষে যথেষ্ট। যে ফুটপাথে ভিড়ে পথ চলা দায় সেই ফুটপাথেই ওদের সংসার। ওদের হাতে উনুনের আঁচ দেখে তিলোত্তমা। রাত শেষে ভোর হয়ে সারাদিনের পর সন্ধ্যা গড়িয়ে আবার নামে রাত। ওদের দিন রাত কাটে শহরের বুকে মাথা রেখে। কেমন আছে ওরা? যাদের ঠিকানা কেয়ার অফ ফুটপাথ।
advertisement
কলকাতা শহরের ওরা কেউ সাফাই কর্মী, কেউ ভ্যানচালক, আবার কেউবা "বাবু"দের ঘরে কাজ করা পরিচালিকা। ফুটপাথ ই ওদের জীবন, ফুটপাতই সঞ্জয় কিংবা চামেলি দেব সবসময়ের সঙ্গী। প্রতিমুহূর্তে নিজেদের সঙ্গে লড়াই নিজেদেরই। শীত গ্রীষ্ম বর্ষা সবসময়ই ফুটপাথ বাসীর কেমন যেন সবকিছুই এখন গা সওয়া হয়ে গিয়েছে। আজ সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোনো অবস্থা যেখানে সেখানে দুবেলা দুমুঠো পরিবার সন্তানদের পেট ভরে খাওয়ার জোগাড় করা কার্যত বিলাসিতার সমান রাকেশ সঞ্জয় দের কাছে।
শীতবস্ত্র জোগাড় করা ওদের কাছে স্বপ্নের মত। তাই শীতের মরশুমে ফুটপাথবাসীর কপালের চিন্তার ভাঁজ ততই চওড়া হয়। ধর্মতলা হোক বা রাসবিহারী পার্কসার্কাস কিংবা শহরের অন্য কোথাও, ফুটপাথ ওদের ঘরবাড়ি হলেও মাথার ওপর খোলা আকাশ, কয়েকজন ফুটপাথ বাসির ঘর ত্রিপল প্লাস্টিক ঘেরা হলেও বেশিরভাগেরই তাও জোটেনি। শীতবস্ত্র তো দূর অস্ত। শীত পড়তে না পড়তেই কেয়ার অফ ফুটপাথ বাসি নতুন আতঙ্কে জর্জরিত সঞ্জয় চামেলী পরেশরা। এখন তাদের ছোট্ট সন্তানদের শীতবস্ত্র জোগাড় হবে কি করে তা ভেবেই কূলকিনারা পাচ্ছেন না। তবে শুধু সঞ্জয় চামেলি বা পরেশ নয়, আজ ফুটপাথবাসীর অনেক বাবা-মায়ের একই চিন্তা। ঘর বেধেছে পথের ধারে যাদের দল সেই ফুটপাথবাসীর চোখে এখন দুশ্চিন্তার জল। কখনো মেঘ ভাসায় পথ, ভাষায় ঘর। আবার কখনো শীত কাঁপায় ওদের হৃদয়। কেউ কেউ এই সমস্ত হতদরিদ্র পরিবারগুলির পাশে কখনো কখনো এসে দাঁড়ায় শীতের পোশাক দেয়, তবে সেখানেও রয়েছে চরম অনিশ্চয়তা।
সরকারি স্তরে স্থায়ী কোনো সমাধান নেই ফুটপাথ বাসীদের জন্য? দিনের পর দিন,বছরের পর বছর, শীত গ্রীষ্ম কিম্বা বর্ষা এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে সঞ্জয় চামেলী পরেশ দের মত আরো অনেকেই। তবে প্রশ্ন আছে কিন্তু উত্তর আজও অজানা অসহায় সিটি অফ জয় কলকাতার ফুটপাথবাসীদের।