ভাড়া বাড়াতে হবে এই দাবিতে গত ২০ দিন ধরে সরব হয়েছে বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে আলোচনার জন্য রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই তৈরি করেছে ফেয়ার রেগুলেটরি কমিটি। তিন সদস্যের এই কমিটি ইতিমধ্যেই ভাড়া সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জমা দিয়েছে কমিটির কাছে ৷ তার পরিপ্রেক্ষিতেই আলোচনা হবে। এরই মধ্যে বেসরকারি বাস মালিক ও ভলভো বাসের মালিকরা রাজ্যের কাছে নতুন করে আবেদন করেছেন যাতে বাসের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দ্রুত নেওয়া হয়। কারণ গত দশ দিন ধরে লাগাতার যে ভাবে পেট্রোল-ডিজেলের দাম বেড়ে চলেছে তাতে কম ভাড়ায় যত আসন তত যাত্রী নিয়ে বাস চালানো মুশকিল হয়ে উঠেছে। এবার বাসের সুরে দাবি দাওয়া পেশ করতে শুরু করল ট্যাক্সি সংগঠন। তাদের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে ৩০ টাকায় ট্যাক্সি চালানো সম্ভব নয়।
advertisement
দশ দিনে তেলের দাম বেড়েছে ৫ টাকা ৮০ পয়সা। ফলে রাস্তায় ট্যাক্সি চালানো আর নয় সম্ভব। ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের নেতা বিমল গুহ জানিয়েছেন, "আমরা অনেক আগেই ভাড়া বাড়াতে বলেছিলাম। যদিও আমাদের কথা শোনা হয়নি। রাজ্যের অনুরোধে আমরা রাস্তায় গাড়ি নামিয়েছি। পুরনো ভাড়াতেই গাড়ি চালাতে হচ্ছে। কিন্তু যে ভাবে জ্বালানির দাম বেড়েছে তাতে আমাদের পক্ষে আর সম্ভব নয়।"
ট্যাক্সি সংগঠন জানিয়েছে আগামী ২৫ তারিখের মধ্যে ভাড়া না বাড়ালে ২৬ তারিখ থেকে তারা রাস্তায় গাড়ি নামাবে না। লকডাউন পূর্ব ও পরবর্তী অধ্যায়ে যত সংখ্যক ট্যাক্সি রাস্তায় নেমেছে তাতে যাত্রী প্রায় হচ্ছে না বললেই চলে। এর মধ্যে ৩০ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা চাইলে আরও যাত্রী হবে না বলেই মনে করছে একাংশ। তবে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে অনড় অন্যতম ট্যাক্সি সংগঠন বিটিএ। শহরের বাকি দুই ট্যাক্সি সংগঠন অবশ্য গাড়ি না চালানোর কোনও কথা বলেনি। তবে তারা জানিয়েছেন, বাস্তব পরিস্থিতি মেনে নিয়েই ভাড়া বাড়ানো উচিত।
যাত্রীদের একাংশ অবশ্য ট্যাক্সি চালকদের এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ। অনেকেরই বক্তব্য, এই লকডাউন অধ্যায়ে প্রত্যেকেরই পকেটে টানাটানি চলছে। সেখানে ট্যাক্সিতে উঠলেই ৫০ টাকা এটা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। চিত্রা সান্যাল, তাঁর পুত্রবধূ অন্তঃসত্ত্বা। বাইপাসের কাছে এক বেসরকারি হাসপাতালে তাকে দেখতে আসেন তিনি। ট্যাক্সিতেই আসা যাওয়া করেন। চিত্রাদেবীর বক্তব্য, "জোর করে মানুষের অসুবিধা আবার বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিধি ঠিক থাকবে তাই ট্যাক্সিতে উঠি। এবার এক ধাক্কায় ২০ টাকা বাড়িয়ে দিলে তা মেটানোর টাকা আমাদের সকলের নেই।" অপর একজন নৈরিতা চক্রবর্তী জানান, "চাকরি করি। আমার একটা বাজেট আছে। তার বাইরে যেতে পারব না।"
এর ফলে অ্যাপ ক্যাব বা অন ডিমান্ড ক্যাবের দিকেই ঝুঁকছেন যাত্রীরা। ফলে ট্যাক্সির ভাড়া বাড়িয়ে আদৌ যাত্রী মিলবে কিনা সেটাই এখন দেখার।
আবীর ঘোষাল