পরিবেশবিদেরা এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট জানাচ্ছে, এমনিতেই বাজি পোড়ানোর ফলে এই কালীপুজোর সময়ে বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়ে। এ ব্যাপারে সবচেয়ে এগিয়ে থাকে কলকাতা এবং হাওড়া, এই দুই শহর। বর্ষা শেষে এবং শীতের শুরুতে হওয়ার কারণে এই দূষণের মাত্রা আরও বাড়ে। রাত যত বাড়ে এবং তাপমাত্রা যত কমে, তত দূষিত কণা নেমে আসে বায়ুমণ্ডলের নীচের দিকে। যা বায়ুদূষণের মাত্রা আরও বাড়িয়ে তুলতে ইতিবাচক ভূমিকা নেয়।
advertisement
এবারে কিন্তু এর উল্টো ছবি ধরা পড়েছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সমীক্ষায়। গত বছর কালীপুজো হয়েছে আরও আগে। বাতাসের তাপমাত্রা ছিল অপেক্ষাকৃত বেশি। তা সত্ত্বেও কলকাতায় বায়ুদূষণের সর্বাধিক সূচক ছাড়িয়েছিল ৮৫০-র চেয়েও বেশি। এ বারে বাতাস ঠান্ডা হওয়া সত্ত্বেও ওই সূচক ২৫০-রও কম থেকেছে। একই চিত্র ধরা পড়েছে হাওড়াতেও। সেখানেও রাতের তাপমাত্রা অনেকটা কমার পরেও দূষণের মাত্রা বাড়েনি কারণ, বাজি পুড়েছে নামমাত্র।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এমন রিপোর্ট মেলার পরে উজ্জীবিত পরিবেশবিদ থেকে চিকিৎসক, সাধারণ মানুষ সবাই এর পক্ষেই।
পরিবেশবিদ জ্ঞানেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত বলেন, "কোভিড সংক্রমণ বৃদ্ধিই নয়, বাজি পোড়ানোর পরে যে দূষণ হয়, তাতে পরিবেশের ওপরে আরও অনেক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তা থেকে যে আমরা মুক্তি পেয়েছি, তা অত্যন্ত ভাল খবর।"
এটি যে ভাল খবর, তা মানছেন চিকিৎসক শিবপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, "দুর্গাপুজোর পরে কোভিড সংক্রমণ বৃদ্ধির হার আশঙ্কার তুলনায় অনেকটাই কম হয়েছে। তার প্রধান কারণ মানুষ সচেতনতার পরিচয় দিয়েছেন। কালীপুজোতেও যে ভাবে মানুষ বাজি বর্জন করায় ইতিবাচক ভূমিকা নিয়েছেন, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। না হলে সংক্রমণ বৃদ্ধি আটকানো সম্ভব ছিল না।"
চাকুরিজীবী প্রদ্যুম্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, "কোভিডে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, যাঁদের সিওপিডি বা শ্বাসকষ্টজনিত রোগ আছে, তাঁরা। তাঁদের জন্য বাজির ধোঁয়া থেকে তৈরি দূষণ কার্যত বিষ। কোভিডের সময়ে ওই দূষণ বাড়লে ভয়াবহ আকার নিত। কাজেই সেটা যে কম হয়েছে, তার থেকে ভাল খবর আর কী-ই বা হতে পারে!"