সূত্রের খবর, তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ পেয়েই সেই চিঠি ডিসি সেন্ট্রালকে পাঠিয়েছেন৷ ডিসি সেন্ট্রাল সেই চিঠি বউবাজার থানাকে পাঠিয়ে অনুসন্ধান শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন৷ অনুসন্ধান করার পর যদি দেখা যায় যে ধর্তব্যযোগ্য কোনও অপরাধ ঘটেছে, সেক্ষেত্রে এফআইআর দায়ের করবে পুলিশ৷
গত বুধবার সকালে নিজের স্ত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজের দিদিমাকে নিয়ে স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে যান কাঞ্চন মল্লিক৷ আসানসোলের বাসিন্দা ৮৬ বছর বয়সি ওই বৃদ্ধার ত্বকের সমস্যা ছিল৷ আউটডোর না থাকলেও ত্বক বিশেষজ্ঞ একজন চিকিৎসক ওই বৃদ্ধাকে মেডিসিনের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে দেখানোর পরামর্শ দেন৷
advertisement
কাঞ্চন এবং তাঁর স্ত্রী যখন ওই বৃদ্ধাকে নিয়ে মেডিসিনের চিকিৎসকের কাছে যান, তখন সেখানে আগে থেকেই অন্যান্য রোগীদের যথেষ্ট ভিড় ছিল৷ তার মধ্যেই তৃণমূল বিধায়কের পরিচয়ের সূত্রেই তাঁর সঙ্গে থাকা রোগিণীকে আগে দেখে দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক মেহবুবার রহমান৷ তিনি স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধানও৷
কিন্তু মেডিসিনের চিকিৎসকও ওই বৃদ্ধাকে পরীক্ষা করে বিশেষ উদ্বেগজনক কিছু পাননি৷ অভিযোগ, সেই সময় অন্যান্য রোগীর চাপ থাকলেও কাঞ্চন এবং তাঁর স্ত্রী বার বার চিকিৎসককে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে থাকেন৷ ওই বৃদ্ধার রক্তচাপ মেপে দেখার জন্য জোরাজুরি করেন তাঁরা৷ ওই বৃদ্ধাকে কোন ওষুধ খাওয়ানো প্রয়োজন না প্রয়োজন তা নিয়েও চিকিৎসককে বার বার প্রশ্ন করতে থাকেন তাঁরা৷
ভিড়ের মধ্যে ক্রমাগত তৃণমূল বিধায়ক এবং তাঁর স্ত্রী একের পর এক প্রশ্ন করায় কর্তব্যরত ওই চিকিৎসক মেজাজ হারান৷ সূত্রের খবর, কাঞ্চন এবং তাঁর স্ত্রীকে ওই চিকিৎসক প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা কি এমবিবিএস পাশ করা চিকিৎসক?’
অভিযোগ, এর পরই কাঞ্চন মল্লিক এবং তাঁর স্ত্রী মিলে কর্তব্যরত ওই চিকিৎসককে রেজিস্ট্রেশন বাতিলের হুমকি দেন৷ তৃণমূল বিধায়ককে বলতে শোনা যায়, ‘আপনার রেজিস্ট্রেশন নম্বর বলুন, বাতিল করে দেবো৷’ এই হুমকি দিতে শুনেই উপস্থিত অন্যান্য রোগীরা তখন সমবেত ভাবে তৃণমূল বিধায়কের আচরণের প্রতিবাদ করেন৷ এর পরই হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান কাঞ্চন মল্লিক এবং তাঁর স্ত্রী৷ ওই চিকিৎসক পরে বলেন, ‘ওনার ব্যবহার আমার খুবই খারাপ লেগেছে৷ আমি সব লিখিতভাবে জানিয়েছি৷’ বুধবারই গোটা ঘটনার কথা স্বাস্থ্য ভবনে জানিয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷
যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগই অস্বীকার করেছিলেন কাঞ্চন মল্লিক৷ ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধেই পাল্টা দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করেন তিনি৷ কাঞ্চন দাবি করেন, বিধায়ক হিসেবে কোনও প্রভাব খাটানোর চেষ্টাও করেননি তিনি৷ বরং তিনি বিধায়ক বলেই তাঁর বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ তোলা হচ্ছে বলে দাবি করেন কাঞ্চন৷