কেনও এই কর্মসূচি?
সংগঠনের তরফে এক প্রেস বিবৃতিতে জানান হয়েছে, "দেউচা পাঁচামি কয়লাখনি রুখে দাও। আমাদের জল-জঙ্গল-জমিন-সংস্কৃতি থেকে কর্পোরেটের নোংরা হাত হঠাও। গ্রামসভা গড়ে তোল। সব আন্দোলন এক হও। ‘উন্নয়ন’-এর আক্রমণে আজ পশ্চিমবঙ্গের হাজারও আদিবাসী, দলিত, সংখ্যালঘুর তথাকথিত ‘পিছড়েবর্গ’ ও সমস্ত গরীব শ্রমজীবী মানুষ সব হারিয়ে ফেলার দুঃস্বপ্নের মধ্যে বাঁচছেন। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও দেশের প্রাচীনতম বাসিন্দা, তফশিলি উপজাতিভুক্ত আদিবাসী সম্প্রদায়-সহ বহু প্রান্তিক মানুষকে পরাধীনতার ও গোলামির জীবনযাপন করতে হয়েছে। সমগ্র রাজ্য তথা দেশজুড়ে তাঁদের জল জঙ্গল জমির অধিকারের দাবিতে লড়াই করতে হয়েছে বার বার। এই বহু সংগ্রাম-আন্দোলনের ফলে তাঁদের জন্য বিভিন্ন অধিকারের আইন সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ঠিকই তবু সেই জল জঙ্গল জমির অধিকার-সহ আরও সাংবিধানিক অধিকারের সামান্যটাও আজ অবধি তাঁদের কাছে পৌঁছয়নি।
advertisement
আরও পড়ুন: কখনও হাসপাতালে, কখন বাড়িতে! সিবিআইয়ের সঙ্গে লুকোচুরি 'কেষ্ট'র
বর্তমানে বীরভূমের দেউচা পাঁচামির দেওয়াণগঞ্জ হরিণসিঙা সহ ৪২ টি গ্রাম এলাকায় আবিষ্কার হয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম কয়লা সম্ভার । রাজ্য সরকারের হিসেব অনুযায়ী এই এলাকায় রয়েছে আনুমানিক মোট ২১০ কোটি ২০ লক্ষ টন কয়লা যাকে সরকার রাজ্য তথা দেশের শিল্পোন্নয়নের শিখর হিসেবে তুলে ধরেছে, আর তাই চেষ্টা চলছে সবসময়ের মতই প্রস্তাবিত খনি এলাকায় বসবাসকারী হাজার হাজার আদিবাসী সহ প্রান্তিক পরিবারের জীবন, জীবিকা, ভিটে, ভাষা, সংস্কৃতি উচ্ছেদের। অথচ আজো পর্যন্ত প্রকল্পের জন্য পরিবেশক্ষতির মুল্যায়ন হয়নি, কোন গণশুনানিও হয়নি, ফলে আইনি কোনও রাস্তাই সঠিকভাবে প্রয়োগ হয়নি। একই রকম বেনিয়মের ও অত্যাচারের কাহিনী রয়েছে ফারাক্কায়, ঠুরগায়, বা তিলাবনী পাহাড়ে। তাই দেউচা পাঁচামির প্রান্তিক মানুষেরাই গ্রাম সভা তৈরি করছেন ২০০৬ সালে বামপন্থীদের সহযোগিতায় ইউপিএ ওয়ান সরকারের তৈরি করা তফসিলি উপজাতি এবং অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী বনবাসী বন অধিকারের স্বীকৃতি আইন, ২০০৬ মেনেও লড়াই করছেন। শ্লোগান তুলছেন-লোকসভা না বিধানসভা? সবচেয়ে বড় গ্রামসভা!
আরও পড়ুন: গৃহবধুর সঙ্গে প্রেম! ছুটে এসেছিলেন সৌদি আরব থেকে, চরম পরিণতি অশোকনগরের যুবকের
আর তার সঙ্গেই রয়েছে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে হাজার হাজার শিক্ষিত চাকরীপ্রার্থীর বঞ্চিত হওয়া, এ রাজ্যের সরকারী শিক্ষাব্যবস্থার দুর্দশা, ও আমাদের শিশুদের সর্বনাশের কাহিনী, আর অন্যদিকে শহীদ আনিস খানের মৃত্যু তদন্তের উপহাসও আমরা ভুলতে পারি না। আর তাই ‘নাগরিক সমন্বয় মঞ্চ’ থেকে আমরা ডাক দিয়েছি আগামী ১০ অগাস্ট বেলা ১২'টা শিয়ালদহ স্টেশনে এক জমায়েত, মিছিল ও ধর্মতলায় জনসভার কর্মসূচির, যেখানে সমস্ত আন্দোলনের আক্রান্ত মানুষ ও লড়াকু সৈনিক অর্থাৎ আদিবাসী, দলিত, সংখ্যালঘুর তথাকথিত ‘পিছড়েবর্গ’-সহ সমস্ত গরীব শ্রমজীবী মানুষ সামনে থেকে আওয়াজ তুলবেন। 'দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনি বাতিল কর, আমাদের জল-জঙ্গল-জমিন-সংস্কৃতি থেকে কর্পোরেটের নোংরা হাত হঠাও, লোকসভা না বিধানসভা? সবচেয়ে বড় গ্রামসভা', কলকাতার পাশাপাশি রাজ্যজুড়ে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে সংগঠনের পক্ষ থেকে।
UJJAL ROY