জঞ্জাল সাফাই বিভাগের বালতি বিলি কোন পর্যায়ে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবার পর্যালোচনা বৈঠক শুরু করছে কলকাতা পুরসভা। বরো ভিত্তিক এই বৈঠক হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার ১ ও ২ নম্বর বরোয় এই বৈঠক হওয়ার কথা। কোথায় কী সমস্যা রয়েছে? কেন ১০০ শতাংশ বালতি বিলি করা যায়নি? বৈঠকে এই ধরনের সমস্যা ও সমাধানের পথ নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে সূত্রের খবর।
advertisement
জানা গিয়েছে, জঞ্জাল সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার নিজে সব কাউন্সিলর ও আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করবেন। কাউন্সিলরদের গড়িমসিতেই এখনও সব ওয়ার্ডে বালতি বিলি সম্পূর্ণ করা যায়নি বলে পুরসভা সূত্রে খবর। বৈঠকে সেই প্রসঙ্গও উঠতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই প্রায় ৮০ শতাংশ বালতি বাড়ি বাড়ি বিলি করা হয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, অনেক আগেই এই কাজ শেষ করার টার্গেট নিয়েছিল পুরসভা। তবে কাউন্সিলরদের একাংশের অসহযোগিতার জন্যই দ্রুত টার্গেট পূরণ করা যায়নি বলে অভিযোগ।
পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব কলকাতা, বেহালা, গার্ডেনরিচ অঞ্চলে এই আবর্জনার বালতি বিলি ঘিরে এখনও কিছু সমস্যা রয়ে গিয়েছে। এরই মধ্যে অনেকেই নিজেদের ইচ্ছামতো বালতি বিলির নির্দেশ দিচ্ছেন। আবার নানা অজুহাতে দিনের পর দিন বালতি বিলির কাজ আটকেও রাখছেন বলে অভিযোগ।
মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘‘প্রথম দিকে খানিকটা সমস্যা হয়েছিল। তবে সেই সমস্যা অনেকটাই মিটেছে। বালতি বিলির কাজ ভাল হয়েছে। পুরসভার তরফে কেন্দ্রীয়ভাবে নজরদারি চালানো হচ্ছে।’’
আবর্জনার বালতি নিয়ে পুরসভা রিভিউ বৈঠক শুরু করার আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শোরগোল ফেলে দেয় বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের একটি ফেসবুক পোস্ট৷ সজল ঘোষ তাঁর পোস্টে দাবি করেছিলেন, ‘গুজরাতের সব খারাপ! তাহলে গুজরাত থেকে বালতি আনতে হল কেন বাংলাকে?’
শুধু তাই নয়, এই বালতি কেনা নিয়ে কাটমানি নেওয়ারও অভিযোগ তুলেছেন সজল ঘোষ। জিএসটি ছাড়া ১৩০ টাকায় এই বালতি কেনার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি৷ এই বালতি কেনার কিছু বিলও ফেসবুক পোস্টে দিয়েছেন তিনি।
তবে এই সমস্ত কিছুকেই বিরোধীদের ‘নোংরা’ রাজনীতি বলে কটাক্ষ করেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তাঁর দাবি, পুরসভার নিয়ম মেনেই বালতি কেনা হয়েছে।
শহরে প্রতি পরিবারে দেওয়া হচ্ছে নীল ও সবুজ রঙের দুটি বালতি। পচনশীল বর্জ্যের জন্য সবুজ বালতি এবং অপচনশীল, পুনর্নবীকরণযোগ্য বর্জ্য নীল বালতিতে সংগ্রহ করা হচ্ছে। তবে, ওই কাজ করতে খানিকটা হলেও লোকবলের সমস্যা রয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রতি ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি আবর্জনা তোলার জন্য আরও ১০ জন করে কর্মী দেওয়া হবে বলেই বিভাগীয় সূত্রে খবর। এই প্রয়োজনীয় লোক বলের পাশাপাশি প্রতিটি বাড়িতে নাগরিকদের সচেতন হওয়াও জরুরি। কোন বালতিতে কোন আবর্জনা রাখতে হবে তা ঠিকমতো পৃথকীকরণ প্রাথমিক স্তরে না হলে এ যায় অসুবিধায় পড়তে হয় জঞ্জাল সাফাই বিভাগের কর্মীদের।