কৃষ্ণদাস সূত্রধর (৫৫) টালিগঞ্জ কুঁদঘাটে বাড়ি। পেশায় ইন্টেরিয়ার ডিজাইনার ইঞ্জিনিয়ার। বছর দেড়েক ধরে হৃদরোগের সমস্যায় আক্রান্ত। তাঁর হার্টে দু'টি ব্লকেজ রয়েছে। গত ২৫ জুলাই শ্বাসকষ্ট নিয়ে এনআরএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয় কৃষ্ণদাস সূত্রধরকে। এরপর ২৮ জুলাই কৃষ্ণদাসের করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে সেদিনই তাকে ভর্তি করা হয়। গ্রীন বিল্ডিংয়ের তিনতলায় ৩০৪ নম্বর বেডে ভর্তি করা হয়।
advertisement
পরিবারের অভিযোগ, চূড়ান্ত চিকিৎসায় গাফিলতি হয়েছে। তাঁদের দাবি, চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় কৃষ্ণদাস বারবার ফোনে স্ত্রী এবং ছেলেকে বলেন, তাঁর হার্টের কোন চিকিৎসা সেখানে হচ্ছে না। এমনকি হার্টের কোনরকম ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না। এই অবস্থা চলতে চলতেই অগাস্টের শেষের সপ্তাহে তাঁর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কর্তৃপক্ষ জানায়, হাসপাতাল থেকে ছেড়েও দেওয়া হবে কৃষ্ণদাস সূত্রধরকে।
এ পর্যন্ত তাও একরকম চলছি। কিন্তু হঠাৎ গোল বাঁধে সোমবার। সেদিন সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে পরিবারকে ফোন করে জানানো হয়, কৃষ্ণদাসের শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। এরপর মঙ্গলবার সকালে কৃষ্ণদাসের স্ত্রী, পুত্র মেডিক্যাল কলেজে গেলে গ্রীন বিল্ডিং-এ কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান রোগীর সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়েছে। তাঁকে সিসিইউ বা ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছে। এরপর রোগীর পরিবার সেদিন সন্ধ্যাতেই মেডিক্যাল কলেজের হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে রোগীর শারীরিক অবস্থা জানতে চায়। সেই সময় তাঁদের জানান হয়, কৃষ্ণদাস সূত্রধর নামে কোন রোগী সিসিইউ-তে ভর্তি নেই।
মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে গোটা পরিবারের। অভিযোগ, তারপর থেকে বারবার হাসপাতালে যাওয়ার পড়েও তাঁদের কোন রকম তথ্য দেওয়া হয়নি। বৃহস্পতিবার সকালে স্ত্রী এবং সন্তান যখন কুঁদঘাটের বাড়ি থেকে হাসপাতালে উদ্দেশ্যে আসছিলেন, তখন হাসপাতাল থেকে ফোন করে রোগীর মৃত্যুর খবর জানানো হয়। পরিবারের গুরুতর অভিযোগ, রোগী সোমবারই মারা যায়। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল গোটা ঘটনা চেপে গিয়েছে।
মৃতের একমাত্র সন্তান সৃজিত সূত্রধর সম্প্রতি কগনিজেন্ট টেকনোলজিতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেছেন। তিনি বলেন, 'একপ্রকার বিনা চিকিৎসায় বাবাকে মেরে ফেলা হল। হার্টের চিকিৎসা তো দুরস্ত, সিসিইউ'তে রাখা হয়েছে বলে মিথ্যাচারিতা করা হয়েছে' উল্টোদিকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এরকম কোনও অভিযোগ তারা পাযননি। লিখিত অভিযোগ অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
ABHIJIT CHANDA