দিনের বেলায় ফুটপাত থেকে পিচ ঢালা রাস্তা হকারদের দখলে চলে যাচ্ছে। এই নিয়ে কিছুদিন আগেই তৎপরতা শুরু হয়েছিল কলকাতা পৌরসভায়। সমীক্ষা হয়েছিল হাতিবাগান থেকে গড়িয়াহাট পর্যন্ত সব মার্কেটে। তখনই পুরসভার অন্দরে প্রশ্ন উঠছিল দিনের ফুটপাত তো পরিষ্কার হল, কিন্তু রাতের ফুটপাত?
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় সব ওলটপালট! বদলাবে শীতের চেহারা, সরস্বতী পুজোয় বাংলায় পারদ চড়বে কতটা!
advertisement
সত্যিই তো! দিনে হকার থাকলেও রাতের ফুটপাত চলে যাচ্ছে ভবঘুরেদের দখলে। কোথাও কাগজ-কুরানির দল, কোথাও ভাবঘুরে গৃহহীনদের আশ্রয়। প্রশ্ন উঠছে এদের মধ্যে কেউ অসামাজিক কাজ করে এসে লুকিয়ে পড়ছে না তো?
আরও পড়ুন: এবার কি তৃণমূলে 'ঘর ওয়াপসি'? বিজেপি বিধায়ক হিরণের ভাইরাল ছবি ঘিরে জোর শোরগোল!
রাতের ফুটপাত কাদের দখলে চলে যাচ্ছে? তাদের পরিচয় কী? এঁদের মধ্যে এমন কেউ নেই তো যাদের জন্য শহরের নিরাপত্তায় বড়সড় প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিতে পারে? কলকাতার মেয়রের মনে এখন এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম তাই পুলিশের শীর্ষ কর্তার কাছে চিঠি লিখে রাতের ফুটপাত সরেজমিনে খতিয়ে দেখার আবেদন জানাচ্ছেন। এই প্রসঙ্গে কলকাতার নগরপালকে চিঠি দিতে চলেছেন বলেই জানালেন ফিরহাদ হাকিম।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, বর্তমানে ১২টা আরবান হোমলেস শেল্টার আছে। কালীঘাটে এক একটা ফ্লোরে ৪০০-৫০০ জন থাকতে পারেন।
ফিরহাদ হাকিম বলেন, "এর আগেও ফুটপাত থেকে তাঁদেরকে শেলটারে রাখা হয়েছে। কাগজকুরানিদের অনেক বার সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাঁরা আবার পালিয়ে চলে আসছেন রাস্তাতেই।"
২০১১ সালের কলকাতা পুরসভার হিসেব অনুযায়ী শহরে গৃহহীন অবস্থায় কাটানো মানুষের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। এঁদের মাথার উপর ছাদ দিতে কেন্দ্র আর্থিক অনুদান দিতে রাজি হলেও এখন জনবহুল শহরে জমির অভাব বড় মাথা বাথ্যার কারণ কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষের। তাই জমি চেয়ে কেন্দ্রীয় বিভিন্ন সংস্থারই দ্বারস্থ হয়েছে পুরসভা।
কেন্দ্র অনুদানের সবুজ সংকেত দেওয়ায় ফুটপাতবাসী গৃহহীনদের জন্য নৈশাবাস তৈরির জন্য ফের তৎপর কলকাতা পুরসভা। ১৪টি এমন নৈশাবাস তৈরি হচ্ছে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায়। বেশ কয়েকটি জমি সম্প্রতি চিহ্নিত হয়েছে।
উত্তর বা দক্ষিণ, পূর্ব বা পশ্চিম কলকাতায় ফুটপাতে শুয়ে থাকতে দেখা যায় অনেককে। এঁদের অধিকাংশ কাগজ কুড়োনি বা ভবঘুরে। তাঁদের পরিচয় কী? তাঁদের মধ্যেই লুকিয়ে নেই তো সন্ত্রাসবাদী বা তাঁদের লিঙ্ক ম্যানরা? এমন নানা জল্পনা উসকে দিয়েছেন খাস কলকাতার মেয়র। কারণ এই ফুটপাত বাসীদের কারও আধার কার্ড বা পরিচিতি কোন কিছুই থাকে না পুলিশ বা পুরসভার প্রশাসনের কাছে।
কলকাতা পুরসভায় 'টক টু মেয়র' অনুষ্ঠানের পর এই দিন ফিরহাদ হাকিম বলেন, "ফুটপাত ভবঘুরেরা দখল করছে। পুলিশকে অনুরোধ, ডিটেইলসে দেখে নিন। অন্য কোনও জায়গার মানুষ সেখানে বসবাস করছেন না তো? আরবান হোমলেস শেলটার করেছি আমরা। এবার তার লিস্ট দিচ্ছি পুলিশকে। জঞ্জাল সাফাই বিভাগকে বলেছি, বোতল প্লাস্টিক পৃথকীকরণ কেন্দ্র করতে ধাপায়। সেখানে ওগুলো রাখবে। এঁদের আইডেন্টিফাই না করা হলে আগামী দিনে শহরে ল এন্ড অর্ডার-এর সমস্যা হতে পারে। পুলিশ কমিশনারকে চিঠি পাঠাচ্ছি। আধার কার্ড, ভোটার কার্ড আছে কিনা দেখে সেল্টারে রাখব।"