দক্ষিণ কলকাতার প্রিন্স বক্তিয়ার শাহ সরণির বাসিন্দা আলেয়া বিবি তীব্র প্রসববেদনা নিয়ে স্বামীর সঙ্গে যাচ্ছিলেন এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে। গন্তব্যে পৌঁছতে পারেননি। মাঝপথে রিকশা থেকে নেমে রাস্তাতেই স্থানীয়দের থেকে সাহায্যের আর্জি জানান তিনি।
তখনই এগিয়ে আসেন স্থানীয় এক মহিলা। ওই পাড়ারই বাসিন্দা অনিতা বর্ধন। আর এক মূহুর্ত দেরি না করে সেখানে তিনি প্রসব করানোর ব্যবস্থা করেন। তত ক্ষণে তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন ওই পাড়ারই আরও বেশ কিছুজন। তবে তাঁরা কেউই জানেন না সন্তান প্রসবের নিয়ম। তখনই অনিমা বর্ধনের মনে পড়ে তাঁর সন্তান হওয়ার সময়ের ঘটনা। সেই মতোই ব্যবস্থা করেন তিনি। তাঁদের সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বুধবার সকাল ৯টা বেজে ২৭ মিনিটে জন্ম হয় ওই সদ্যোজাতর।
advertisement
আরও পড়ুন : কোভিড অতিমারিতে প্রয়াত স্ত্রীর ২.৫ লক্ষ টাকার সিলিকন মূর্তি বাড়িতে বসালেন প্রৌঢ়
তবে সন্তান জন্মালেও প্রথমে কাঁদতে দেখা যায়নি নবজাতককে। তখন আরও চিন্তিত হয়ে পড়ে স্থানীয়রা। অনিতা বর্ধন জানান,"আমার তখন মনে পড়ে আমার সন্তান হওয়ার সময়েও প্রথমে ও কাঁদেনি। চিকিৎসকরা সোজা করে ধরে পিঠ চাপড়ানোর পর কেঁদে ওঠে ফেলে আমার মেয়ে। আমি সেই পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগাই এবং তাতে সফল হই। তারপর একটা ব্লেড জোগার করে গরম জলে সেটাকে ধুয়ে সন্তানের প্রসবের পর বাকি যে কাজগুলি থাকে, সেগুলো করি। কারণ এই সময়ের মাঝে আমরা দেখছিলাম আস্তে আস্তে ওর মা ঝিমিয়ে পড়ছিল। তবে রক্ত বেরিয়ে যাওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠেন মহিলা। তখন আমি আমার জামা কাপড় ওকে দিই এবং ওকে হাসপাতালে পাঠাই।“
আরও পড়ুন : 'চেয়ার', 'টেবিল'-এর বাংলা কী? জানেন না বেশির ভাগ বাঙালিই
তবে পরিবারের অভিযোগ, যেহেতু বাইরে সন্তানের জন্ম হয়েছে তাই এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে মাকে ভর্তি নিলেও প্রথমে ভর্তি নেওয়া হয়নি ওই সদ্যোজাতকে। কলকাতার পুলিশ ও গল্ফগ্রিন থানার সঙ্গে যোগাযোগ করার পর ভর্তি নেওয়া হয় ওই সদ্যোজাতকে। বর্তমানে ওই মা এবং সন্তান দু’জনেই সম্পূর্ণ সুস্থ। এই পুরো অভিজ্ঞতাই অনিতা বর্ধন ভাগ করে নিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।