অগ্নিকাণ্ডের পর বড়বাজারের এই হোটেলে সম্পর্কে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। বুধবার ঘটনাস্থলে যান দমকলের ডিজি রণবীর কুমার। তিনি জানান, ওই হোটেলের ‘ফায়ার লাইসেন্স’-এর মেয়াদ শেষ হয়েছিল তিন বছর আগেই। তারপর তা আর নবীকরণ করেননি কর্তৃপক্ষ। হোটেলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকলেও অগ্নিকাণ্ডের সময় তা কাজ করেনি।
advertisement
দমকলের প্রাথমিক অনুমান, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা আদৌ কার্যকর ছিল না ওই হোটেলে। দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের সময় হোটেলে ‘ফায়ার অ্যালার্ম’ বাজেনি। হোটেলে প্লাইউডের কাজ চলছিল। সেখান থেকেই ধোঁয়া ক্রমে উপরের দিকে ওঠে। অভিযোগ, হোটেলের জানলাগুলি অধিকাংশই বন্ধ ছিল। সেন্ট্রাস এসির ব্যবস্থা না-থাকা সত্ত্বেও কেন জানলা বন্ধ, কেন ধোঁয়া বেরোতে পারল না, প্রশ্ন উঠেছে।
হোটেলের বাইরে থেকে দেখা গিয়েছে, বেশ কয়েকটি জানলা ইট-সিমেন্ট দিয়ে বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই কাজের নেপথ্যে কোন কারণ ছিল, প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে এই কাজ করা হয়েছিল কি না, তা স্পষ্ট নয়। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, হোটেলের অন্য একটি অংশে আরও একটি সিঁড়ি রয়েছে। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের সময় শাটার দিয়ে ওই সিঁড়ির প্রবেশপথ বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরে যদিও শাটার খুলে দেওয়া হয়। এত বেনিয়ম সত্ত্বেও কেন স্থানীয় পুর প্রশাসনের বিষয়টি নজর আসেনি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বড়বাজারের হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ফলে মৃত ১৪ জনের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এসেছে। আরজি কর হাসপাতাল, নীলরতন সরকার (এনআরএস) হাসপাতাল এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃতদের দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, অধিকাংশেরই মৃত্যু হয়েছে আগুনের ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে। এক জন প্রাণ বাঁচাতে হোটেল থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। এ ছাড়া, কারও কারও দেহে আগুনে পোড়ার ক্ষতও পাওয়া গিয়েছে।
তদন্তকারী টিম সিট-এর পক্ষ থেকে আজ, বৃহস্পতিবার বহুতলে তদন্ত করতে আসবেন প্রতিনিধি দল। ফরেনসিক সবুজ সংকেত দিলে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকেরা আসতে পারেন বহুতল সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে। মূলত এই বহুতলে কোথায় কোথায় মূল নকশা থেকে বিচ্যুতি বা ডিভিয়েশন করা হয়েছে এবং আগুন লাগার পর-এর স্ট্রাকচারাল স্টেবিলিটির কোন ক্ষতি হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখবেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা।
