দেহদানের নিয়ম কী?
কোনও সাবালক নাগরিক এক নিকটাত্মীয়-সহ দুই সাক্ষীর সামনে লিখিত ভাবে মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার করতে পারেন। নাবালকও পারে, তবে অভিভাবকের অনুমতি সাপেক্ষে। অঙ্গীকারপত্রটি সব সময়ে সঙ্গে রাখাই বাঞ্ছনীয়। নিকটজনদের কাছেও বিষয়টি জানিয়ে রাখা চাই। কারণ, মৃত্যুর পরে অঙ্গীকার রক্ষার দায়িত্ব তাঁদেরই।
মৃত্যুর পর হাসপাতালে দেহদান করার পদ্ধতি
advertisement
মরদেহ এবং অঙ্গীকারপত্র সঙ্গে নিয়ে যে কোনও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অ্যানাটমি বিভাগে নিয়ে যেতে হবে। কলেজ বন্ধ থাকলে জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তিনি মরদেহ মর্গে রাখার ব্যবস্থা করবেন। কলেজ খুললে কর্তৃপক্ষ দেহটি সংগ্রহ করবেন এবং রসিদ দেবেন। অঙ্গীকার করা না থাকলেও কারও মৃত্যুর পরে নিকটাত্মীয়েরা ইচ্ছে করলে দেহদান করতে পারেন। মরণোত্তর চক্ষুদানের ক্ষেত্রে এমনটা প্রায়ই হয়।
২৪ ঘণ্টার যে কোনও সময়ে মরণোত্তর দেহদান করা যাবে না কোনও মেডিক্যাল কলেজে। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্তই নির্দিষ্ট সময়সীমা। বেশি রাতে দূর থেকে ভুল করে কেউ শবদেহ নিয়ে পৌঁছে গেলে মরদেহ রাতভর রাখা থাকবে কলেজের মর্গে। সেখান থেকেই পরের দিন সম্পন্ন হবে দেহদান প্রক্রিয়া।
কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা তৃতীয় কোনও পক্ষের মাধ্যমে দেহদান করা যাবে না। যাঁর মরদেহ দান করা হচ্ছে, দেহদানের সময়ে তাঁর কোনও নিকটাত্মীয়কে হাজির থাকতে হবে মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগে। এবং মৃত ব্যক্তি এবং নিকটজন, উভয়েরই পাসপোর্ট অথবা আধার অথবা ভোটার কার্ডের মধ্যে যে কোনও একটি সচিত্র পরিচয়পত্র দেহদানের সময় সঙ্গে রাখতে হবে।
মরণোত্তর দেহ বা চক্ষুদান করলে কি কোনও সুবিধা পাওয়া যায়?
দান সব সময়েই নিঃশর্ত। কোনও সুযোগ-সুবিধার প্রশ্নই নেই।
ভারতবর্ষে দেহদানের ইতিহাস
ভারতবর্ষে প্রথম প্রখ্যাত বিজ্ঞানী জে বি এস হলডেন ১৯৬৪ সালের পয়লা ডিসেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশে দেহ দান করেন৷ পশ্চিমবঙ্গে ১৯৮৬ সালের ৫ নভেম্বর জে বি এস হলডেনের ৯৫তম জন্ম দিবস উপলক্ষে গণদর্পণ সংস্থার পক্ষ থেকে ব্রজ রায়ের উদ্যোগে ৩৪ জনের মরণোত্তর দেহ দানের অঙ্গীকারের মাধ্যমে আন্দোলন শুরু হয়৷