শহরের ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণ কলকাতা পুরসভার মাথাব্যথা। বায়ুদূষণ রুখতে সবুজায়নে জোর দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। পুরসভার ক্ষমতায় সবটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বুঝেছেন পুর আধিকারিক থেকে মেয়র পারিষদেরা। শহরের সবুজায়নে বেসরকারি সংস্থাকে আহ্বান মেয়র ফিরহাদ হাকিমের।
জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে শহরে বেড়েছে দূষণ। দূষণের নিরিখে দিল্লির খুব একটা পিছনে নেই শহর কলকাতাও। এজন্যই শহরের সবুজায়নে জোর দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। সেক্ষেত্রে বাণিজ্যিক সংস্থা গুলির সাহায্য চাওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা ভেস্তে যায়। প্রথমে উৎসাহী হলেও মূলত রক্ষণাবেক্ষণ এর কাজে কার্যত আগ্রহ হারায় সংস্থাগুলি। এই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সে কথা মাথায় রেখে এবার সারা বছরের জন্য বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির সঙ্গে শহরের সবুজায়নের চুক্তি করতে উদ্যোগী হয়েছে কলকাতা পুরসভা।
advertisement
আরও পড়ুন : প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাওয়ায় মনোকষ্টে প্রকাশ্যে নিজেকে গুলি করে 'আত্মঘাতী' কিশোর
কলকাতা পুরসভায় শুক্রবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে মেয়র বলেন, শহরে আমরা প্রচুর গাছ লাগিয়েছি। কিন্তু পুরসভাকে সীমিত ক্ষমতার মধ্যেই সবটা করতে হয়। তাই বেসরকারি উদ্যোগকে আহ্বান জানানো হচ্ছে। কলকাতাকে আরও সবুজ করতে তারাও সিএসআর অথবা কর্পোরেট সোসাল রেসপন্সিবিলিটি ফান্ডে কিছু উদ্যোগ নিন। আমরা খুব দ্রুত এই মর্মে আগ্রহপত্র চাইব।
কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, ইতিমধ্যে শহরের বেশ কিছু পার্ক ফুটপাতের ধারে তৈরি করা বাফার জোন এবং মিডিয়ান স্ট্রিপে বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থা দায়িত্ব নিয়েছেন। যারা নিয়মিত সেই গুলি রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকেন।
অনেক জায়গাতেই প্রথমে কাজ করলেও পরের দিকে তাঁরা দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। তাই নতুন করে বিষয়টি নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছেন পুর আধিকারিকেরা। উদ্যান থেকে শুরু করে রাস্তার ধারে বাফারজোন কিংবা নতুন নতুন জায়গায় ভার্টিক্যাল বা ঝুলন্ত উদ্যান বানানোর ভাবনাও রয়েছে কলকাতা পুরসভার। বেসরকারি সংস্থা এই ধরনের উদ্যোগ নিলে তারা সিএসআর ফান্ডে বিশেষ ছাড় পাবেন। সেই কারণেই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে উদ্যোগ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন : কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়লেন নেইমার, স্বপ্নের নায়ককে সান্ত্বনা দিতে মাঠে খুদে এই ক্রোট সমর্থক
আগ্রহপত্র হওয়ার পর যারা যারা আগ্রহ প্রকাশ করবেন তাদেরকে নিয়ে সামিট বা বৈঠক করে এই ধরনের কাজ করতে গিয়ে কী কী সমস্যা তাদের পড়তে হচ্ছে! সব নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনে সুস্পষ্ট নীতি তৈরি করা হবে।
কলকাতা পুরসভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল, আগামী এক বছরে শহর জুড়ে ৫০ হাজার গাছ লাগবে পুরসভা। শহরে নতুন করে গাছ লাগানোর জায়গার কিছুটা সমস্যা থাকায় প্রত্যেক ফ্ল্যাটের গ্রিনারি স্পেসে, টবে গাছ লাগানোর দিকে জোর দেওয়া হয়েছিল। দশ ফুটের কম উচ্চতার ফলের গাছকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউর মতো বেশ কয়েকটি রাস্তা চিহ্নিত করেছে পুরসভার উদ্যান বিভাগ। ধর্মতলার মোড় থেকে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, রাজবল্লভপাড়া, শোভাবাজারের, লালমন্দির পর্যন্ত গাছের দেখা মেলাই ভার। উদ্যান বিভাগের উদ্ভিদবিদদের পর্যবেক্ষণ, কার্যত বৃক্ষশূন্য। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে রাস্তার দু'পাশে ৫০০ দেবদারু গাছ বসানো যেতে পারে। দেবদারু গাছ সোজা লম্বা হয়ে উপরের দিকে ওঠে। গাছের ডালপালাও বিশেষ ছড়িয়ে যায় না। তাই অল্প জায়গা পেলেই এই গাছ বেড়ে উঠতে পারে।