#কলকাতা: শীতের সকালে নজরুল সফরে মাতলো শহর কলকাতা। নজরুলের জীবনে কেনা একমাত্র গাড়ি ক্রাইসলার চড়ে স্মৃতির সরনীতে হাটলেন কাজী নজরুল ইসলাম এর নাতনী, সব্যসাচী কন্যা মিষ্টি কাজী ও তার পরিবার। সময়টা ছিলো ১৯৩১। জীবনের নানা ওঠাপড়ার পর কাজী নজরুল ইসলাম যুক্ত হলেন চলচ্চিত্র নিরমাতা সংস্থা ম্যাডান থিয়েটার র সংগে বেতনভোগী সুরকার হিসেবে। বহুদিন পর হাতে তখন বেশ অনেক টাকা। বহু দিনের সখ একটা গাড়ি কেনার জন্য রীতিমতো মুখিয়ে উঠলেন নজরুল। ওই বছরই গাড়িও কিনেই ফেললেন নজরুল। বাড়িতে এলো সেই সময়ের দামী গাড়ি ক্রাইসলার। জীবনে কত সংগ্রামর পর একটা স্বপ্ন পূরণ। আনন্দে অধীর নজরুল কারনে অকারণে গাড়ি নিয়ে ঘুরতে বেরোন।
advertisement
একা নন, বন্ধুদের সংগে নিয়েই। একবার সাহিত্যিক স্বপনবুড়োকে সঙ্গে করে এই ক্রাইসলার চেপেই নজরুল রওনা হলেন দার্জিলিঙে। সেখানে তখন ছুটি কাটাতে গিয়েছেন রবীন্দ্রনাথও। পাহাড়ে গিয়েই নজরুল ছুটলেন কবিগুরুর সংগে দেখা করতে। নজরুল কে দেখে আনন্দে মেতে উঠলেন রবীন্দ্রনাথ । নজরুল গবেষক ও সাহত্যিক বিনোদ ঘোষাল এর মতে " আসলে ট্যাক্সি চাপার সখ নজরুলের বরাবরই। এমনও অনেকসময় হয়েছে ট্যাক্সি চেপেছেন অথচ পকেটে পয়সা নেই। বন্ধুরা মিটিয়েছেন ভাড়া। "এহেন নজরুল নিজের গাড়ি পেয়ে যে পাহাড় সফর করবেন সেটাই তো স্বাভাবিক ।। কিন্তু সুখ নজরুলের জীবনে কখনও স্থায়ী হয় নি।। গাড়ির কিস্তি চুকাতে না পারায় বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ক্রাইসলার নিয়ে চলে যায় গাড়ি কম্পানি।। নজরুলের সেই আশা আর কান্নার স্বাক্ষী ক্রাইসলার দেখলো শহর করকাতা।। রবিবার অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশান অব ইস্টার্ন কলকাতা আয়োজিত ভিন্টেজ কার র্যালি তে নজরুলের সেই ক্রাইসলার চেপে শহর ঘুরলেন মিস্টি কাজী।। সঙ্গে সাংস্কৃতিক সংস্থা অগ্নিবীণার সদস্যরা। স্মৃতি হাতরাচ্ছিলেন কবির নাতনি। " রঙ্গবন্ধু দাদুকে বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়ার পর বাড়ি গাড়ি সবই দিয়েছিলেন সরকারি ব্যবস্থাপনায়। অসুস্থ দাদুকে নিয়ে আমরা বেরোতাম গাড়ি চেপে ঘুরতে।
কিন্তু জীবনের কেনা এই প্রথম গাড়ির কথা দাদু কখনও ভোলেন নি " রবিবার সকালে কাজী নজরুল ইসলামের একটি ছবিও সংগে করে এনেছিলেন মিস্টি আপা। একটি রজনীগন্ধার মালা পড়িয়েদিলেন সেই ছবিতে।। শীতের আমেজ তখনো কাটেনি। একটা আলসে রোদ একটু একটু করে উঁকি মারছিলো। ছবি হয়ে বসে ছিলেন তিনি। তার স্মৃতির ক্রাইসলার দেখল শীতের শহর।