কলকাতা: সংসদের অধিবেশন চলাকালীনই তোলপাড় তৃণমূলের অন্দর মহল। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরিয়ে দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতার দায়িত্ব দিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সোমবার তৃণমূলের সংসদীয় দলের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে এই ঘোষণা করে তৃণমূলনেত্রী। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকায় সংসদে আসতে পারছেন না৷ এই পরিস্থিতিতে অভিষেককেই লোকসভায় গুরুদায়িত্ব দিলেন মমতা৷ কিন্তু সবচেয়ে বেশি আলোচনায় চলে এলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভার চিফ হুইপ পদ থেকে পদত্যাগ করলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, লোকসভায় তৃণমূলের পারফরম্যান্সে খুব একটা সন্তুষ্ট নন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
advertisement
যদিও লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্যসচেতকের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরই শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের৷ কল্যাণকে অভিষেক দলের মুখ্যসচেতক হিসেবেই তিন-চার দিন কাজ চালানোর অনুরোধ করেছেন বলেও জানান কল্যাণ৷ এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছেন, কল্যাণের পর সংসদে তৃণমূলের মুখ্যসচেতক কে হবেন? তৃণমূল সূত্রে খবর, কাকলি ঘোষ দস্তিদার লোকসভায় তৃণমূলের চিফ হুইপের দায়িত্ব পেতে পারেন।
আরও পড়ুন: ‘এটা সরাসরি অপমান!’ পদত্যাগ করেই ফুঁসে উঠলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়! আসল কারণ কোন ‘নারী’? স্পষ্ট করে দিলেন সব! সরাসরি নিলেন নাম
এদিকে, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি এবার থেকে লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা হচ্ছেন অভিষেক৷ ফলে জাতীয় রাজনীতিতেও অভিষেকের গুরুত্ব আরও বাড়ল৷ কিন্তু মুখ্যসচেতকের পদ থেকে পদত্যাগের পরই ফুঁসে ওঠেন কল্যাণ। কেন কল্যাণ মুখ্যসচেতকের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন, তা নিয়েই শুরু হয় জল্পনা৷ কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে সংঘাতের জেরেই কল্যাণের এই সিদ্ধান্ত কি না, তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়৷
যদিও এদিন পদত্যাগের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় মহুয়াকে তুলোধনা করেন কল্যাণ। একটি পডকাস্টে মহুয়ার বক্তব্য নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তিনি লেখেন, ”আমি সম্প্রতি মহুয়া মৈত্রর একটি পাবলিক পডকাস্টে করা ব্যক্তিগত মন্তব্যগুলি নোট করেছি। তার শব্দের নির্বাচন, যার মধ্যে একজন সহকর্মী সাংসদকে ‘শূকর’-এর সঙ্গে তুলনা করার মতো অমানবিক ভাষাও রয়েছে। এটা শুধু দুর্ভাগ্যজনক নয়, বরং স্বাভাবিক আলোচনার মৌলিক নিয়মগুলির প্রতি গভীর অবজ্ঞা প্রতিফলিত করে।” এছাড়াও আরও নানা বক্তব্য তুলে ধরে মহুয়াকে নিশানা করেন কল্যাণ। ফলে ভোটের আগে তৃণমূলের অন্দরের কোন্দল নিয়ে উঠে গেল ঝড়।