শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত যে দুটি মামলা সরানোর নির্দেশ দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্ট তার মধ্যে একটির সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে নিয়োগকাণ্ডে ধৃত তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুব নেতা কুন্তল ঘোষের। শনিবার আলিপুর আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন কুন্তল। স্বভাবতই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে মামলা সরানোর প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। কী বললেন কুন্তল ঘোষ?
advertisement
সাধারণত আদালতে আসা যাওয়ার পথে প্রায়শই নানা মন্তব্য করে থাকেন কুন্তল ঘোষ। এর আগে তিনি একের পর এক নাম ভাসিয়ে দিয়েছিলেন সাংবাদিকদের সামনে এই সময়গুলিতেই যা নিয়ে উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতি। এদিনও সাংবাদিকরা কুন্তলের কাছে জানতে চেয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে কী বলতে চান কুন্তল?
কিন্তু এদিন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হল না। বরং প্রশ্নটা শুনেও যেন না শোনার ভান করলেন কুন্তল ঘোষ। প্রশ্নের উত্তরে দেখা গেল কার্যত পুরো মুখে কুলুপ এঁটেছেন তিনি। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ঘিরে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের কোনোটিরই উত্তর এদিন তিনি দিতে চাননি। প্রশ্ন এড়িয়ে আদালতে ঢুকে যেতে দেখা যায় তাঁকে।
কুন্তল গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই সংবাদমাধ্যমের সামনে একাধিক বার একাধিক প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন এই নেতা। তবে কিছুদিন থেকেই বেশ ব্যতিক্রমী ভূমিকায় দেখা গেল তাকে। যদিও হঠাৎ করে কুন্তলের ভোলবদলের এই কারণ অবশ্য কারও জানা নেই। প্রসঙ্গত, কুন্তলের চিঠি মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের উপর কিছুদিন আগেই অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। তবে এর পর শুক্রবার শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মতো সেই মামলা থেকেই সরানো হয়েছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে।
চলতি মাসেই কুন্তল অভিযোগ করেছিলেন তাকে দিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি, সিবিআই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলানোর চেষ্টা করছে। কুন্তলের এই মন্তব্য ঘিরেই তোলপাড় হয় রাজ্যে। শুধু মন্তব্য করেই অবশ্য থেমে থাকেননি কুন্তল। এই নিয়ে আদালতকে চিঠি পাঠানোর পাশাপাশি হেস্টিংস থানায় লিখিত ভাবে অভিযোগও দায়ের করেন কুন্তল। কুন্তলের চিঠি মামলা যায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। সেখানেই বিচারপতি নির্দেশ দিয়ে বলেন এই মামলায় তদন্তকারীরা চাইলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসবাদ করতে পারে। বিচারপতির এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক।