তদন্তের জন্য শুক্রবার যাদবপুরের হস্টেলের কয়েকজন পড়ুয়াকে ডেকে পাঠান হয়, শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে অসঙ্গতি মেলায় অঙ্কে স্নাতকোত্তরের প্রাক্তনী সৌরভকে প্রথমে আটক এবং রাতে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশি র্যাডারে রয়েছে হস্টেলের আরও কয়েকজন আবাসিক। স্বপ্নদীপের আত্মহত্যার নেপথ্যে কাদের কাদের ভূমিকা রয়েছে, তাঁর সঙ্গে কী আচরণ করা হয়েছিল, কেন সে অসংলগ্ন আচরণ করছিল সেদিন দুপুরের পর থেকে, তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে।
advertisement
ঘটনার পর বেশ কয়েকটি ছাত্র ইউনিয়নের অভিযোগ, প্রতিটি ঘটনার তদন্ত একটি নির্দিষ্ট গতি নিয়ে শুরু হয়, শেষ পর্যন্ত কোথায় হারিয়ে তা কেউ জানে না। এই ঘটনার পর প্রত্যেকটি ছাত্র তথ্য দিচ্ছেন ভাসা ভাসা ঠিকই, অনেকেই ফেসবুকেও লিখছেন। কিন্তু সামনে আসতে ভয় পাচ্ছেন। স্বপ্নদীপের মৃত্যুর কারণ কি?র্যাগিংয়ের নামে এমন কিছু ঘটেছিল পর পর কয়েকদিন ধরে, তা মেনে নিয়তে পারেনি বগুলার এই পড়ুয়া তা স্পষ্ট। বাবা-মাকে বারে বারে জানিয়েছিল সে সেখানে থাকতে পারছে না, তাঁকে যেন বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কি ঘটছিল তাঁর সঙ্গে?
আরও পড়ুনঃ রক্তে ভাসছিল শরীর, হস্টেলের নীচে পড়েছিলেন বিবস্ত্র স্বপ্নদীপ, কী ঘটেছিল সেদিন?
স্বপ্নদীপের দু-একজন সহপাঠী, যাঁরা মাত্র কয়েকদিন ওঁর সঙ্গে মিশেছিলেন, ক্লাস করেছিলেন তাঁদের দাবি, স্বপ্নদ্বীপ বেশ লাজুক প্রকৃতির ছিলেন। স্বপ্নদীপের জেঠু জগদীশ কুন্ডুও কথায় কথায় এমনই ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ‘স্বপ্নদ্বীপ গ্রাম্য সরল কথা বলত। ভীতু প্রকৃতির। গ্রাম থেকে শহরে এসে দু’দিনেই সকলের সঙ্গে মিশে যাবে, সে রকম ছিল না। তার ওপর ভয় চেপে বসেছিল। দুপুর গড়ালেই তাঁর মধ্যে ভয় জাঁকিয়ে বসছিল। বিভীষিকাময় হয়ে উঠত প্রতিটি রাত।’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সায়ন সরকার সোশ্যাল মাধ্যমে পোস্ট করেছেন স্বপ্নদীপের মৃত্যুর কারণ নিয়ে। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, স্বপ্নদীপের একই বর্ষের কেমিস্ট্রির এক ছাত্রের সঙ্গে তাঁর কথা হয়। হোয়াটস অ্যাপে চ্যাটও হয়। তিনি জেনেছিলেন স্বপ্নদীপকে যৌন হেনস্থা করা হয়েছিল সেই রাতে। সে পুরুষ কিনা? তা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বাধ্য করা করেছিল সিনিয়ার দাদারা। যার মধ্যে রয়েছেন গ্রেফতার হওয়া প্রাক্তনী সৌরভ। এমনকি সৌরভ চৌধুরীর মদতই সবথেকে বেশি ছিল বলে দাবি। স্বপ্নদীপকে ‘দাদা’রা খোলা ছাদে নিয়ে গিয়ে এমন কিছু করতে বলেছিলেন, তাতে তিনি লজ্জা মেনে নিতে পারেননি। তারপরে তাঁর মাথা আর কাজ করেনি। উদ্ভ্রান্তের মতো আত্মহননের পথ বেছে নেন।
SHANKU SANTRA