সূত্রের খবর, তদন্তে এখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে, তাতে বুধবার ওই নবাগত ছাত্রকে চা খাইয়ে সিনিয়রদের রুমে নিয়ে গিয়েছিলেন আরেক ধৃত ছাত্র সৌরভ চৌধুরী৷ তদন্তকারীরা আন্দাজ করছেন, সেই সময় সেই ঘরে বুধবারের ধৃত ছাত্রদের প্রত্যেকেই উপস্থিত ছিলেন৷ ছিল আরও বেশ কয়েকজন সিনিয়র৷ ওই ঘরে মৃত্যুর আগে প্রায় তিন ঘণ্টা ছিল ওই ছাত্র৷ অভিযোগ, ওই নবাগত ছাত্রটির যখন দ্বিতীয় বার ‘ইন্ট্রো’ নেওয়া হচ্ছে, ওই তিন প্রাক্তনী বাকিদের র্যাগিং-এ উৎসাহিত করেছেন বলে দাবি পুলিশের৷ নিজেরাও মানসিক চাপ সৃষ্টি করেছেন ওই ছাত্রের উপর৷
advertisement
আরও পড়ুন: ‘রুমেই ছিলাম..’ ঘটনার পরে ‘আমরা সব ওখান থেকে পালালাম’, মা-কে বলেছিল ধৃত প্রাক্তনী অসিত
তদন্তকারীরা মনে করছেন, ওই তিন ঘণ্টায় ওই ছাত্রের উপরে এমন কিছু মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হয়ে থাকতে পারে, যার জেরে সে দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে আসে এবং তিন তলার বারান্দা থেকে কোনও ভাবে পড়ে যায়৷ ধৃতদের একজন দাবি করেছেন, তিনি ওই ছাত্রকে আটকাতেও গিয়েছিলেন, কিন্তু পারেননি৷ তবে গোটা বিষয়টিই এখন তদন্ত সাপেক্ষ৷
সূত্রের খবর, এরপরে গুরুতর জখম অবস্থায় ওই ছাত্র যখন নীচে পড়ে, তাকে দ্রুত হাসপাতালে না নিয়ে গিয়েই বসে জিবি-র মিটিং৷ সেখানে এই তিন প্রাক্তনীও থাকতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে৷ এরপর ছাত্রদের একাংশের তরফে নিরাপত্তারক্ষীদের নির্দেশ দেওয়া হয়, গেট যেন বন্ধ থাকে, বাইরে থেকে কেউ যাতে ভিতরে না ঢোকে৷ এরপর একটি হলুদ ট্যাক্সি ও একটি অটোয় খবর দেওয়া হয়৷ হলুদ ট্যাক্সি আগে এলে তার পিছনের সিটে গুরুতর আহত ওই ছাত্রকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেয় অভিযুক্তদের একাংশ৷
আরও পড়ুন: চা খাইয়ে সৌরভই নিয়ে গিয়েছিল সিনিয়রদের ঘরে, তার পরে ৬ জন মিলে তিন ঘণ্টা টানা ‘নির্যাতন’?
পুলিশ সূত্রের খবর, গুরুতর জখম অবস্থায় প্রথম বর্ষের ছাত্রটিকে হাসপাতালে নিয়ে বেরিয়ে গেলেই ওই তিন প্রাক্তনী গা ঢাকা দেওয়ার পরিকল্পনা শুরু করেন৷ নিজেদের মধ্যে শুরু হয় আলোচনা। পুলিশের দাবি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছে, ঘটনার পরে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে হস্টেল থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন ওই তিন প্রাক্তনী৷ তবে তার আগে অন্যান্য আবাসিক ও তাদের সঙ্গীদের একজোট হয়ে থাকতে বলার জন্য হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন,বাইরে যাতে কোনও ভাবেই কথা না বেরোয় তার জন্য সকলকে বলেছিলেন এঁরা৷
‘আলু’ ওরফে অরিত্র মজুমদার ও সৈকত শিট৷ হঠাৎ করে পড়ুয়ার মৃত্যুকাণ্ডে উঠে আসছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কালেক্টিভের অন্যতম নেতৃত্ব ও হস্টেলের প্রভাবশালী দুই ছাত্রনেতার নাম৷ আর তার সঙ্গেই প্রকাশ্যে আসছে অদ্ভুত তথ্য, এরাই নাকি ঘটনার পর মিটিং বসিয়েছিল মেন হস্টেলে, বন্ধ করে দিয়েছিল হস্টেলের দরজা৷ সেখানে পুলিশকে ঢুকতে পর্যন্ত দেয়নি৷ আপাতত এই দুই নেতাই পলাতক বলে শোনা যাচ্ছে।