গত ৯ অগাস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বারান্দা থেকে নীচে পড়ে মৃত্যু হয় প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার৷ র্যাগিংয়ের শিকার হয়েই ওই ছাত্রের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ উঠেছে৷ এ দিন আদালতে সরকারি আইনজীবী যা দাবি করেছেন, তা থেকে পরিষ্কার, মৃত্যুর আগে ওই ছাত্রকে র্যাগিং করা হয়েছিল, সেই প্রমাণ পুলিশের হাতে এসেছে৷
যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সৌরভ চৌধুরীকেই প্রথম গ্রেফতার করেছিল পুলিশ৷ এর পর একে একে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্র মিলিয়ে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷
advertisement
এ দিন আদালতে সরকারি আইনজীবী দাবি করেন, গত ৯ অগাস্টের ঘটনার পর তড়িঘড়ি একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি হয়৷ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পড়ুয়ার মোবাইল থেকেই সেই গ্রুপের খোঁজ পায় পুলিশ৷ সেই গ্রুপের চ্যাটও পুলিশের হাতে আসে৷ সরকারি আইনজীবীর দাবি, সৌরভকে বাঁচানোই ছিল ওই গ্রুপ তৈরির মূল উদ্দেশ্য৷ ওই গ্রুপের মাধ্যমেই বাকি ছাত্রদের জানানো হয়, সৌরভের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বলতে হবে যে মায়ের শরীর খারাপ থাকায় সৌরভ যাদবপুরের হস্টেলে নিয়মিত আসতেন না৷ সেখানে তিনি থাকতেনও না. এই গ্রুপের কথা উল্লেখ করেই গোটা ঘটনাকে পরিকল্পিত এবং সৌরভকে চক্রান্তের কিং পিন বলে অভিযোগ করেন সরকারি আইনজীবী৷ ধৃতদের আরও জেরার প্রয়োজন বলেও দাবি করেন তিনি৷
সরকারি আইনজীবী এ দিন আদালতে আরও দাবি করেন, মৃত্যুর আগে প্রথম বর্ষের ওই পড়ুয়াকে হস্টেলের বারান্দায় ঘোরানো হয়েছিল, সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ৷ শারীরিক নির্যাতন না হলেও ওই পড়ুয়া মানসিক নির্যাতনের শিকার হন বলেও অভিযোগ করেন সরকারি আইনজীবী৷ এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরই পুলিশো র্যাগিংয়ের ধারা যুক্ত করেছে বলেও জানান তিনি৷ ধৃত ১২ জনই এই ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত বলেও দাবি করেন তিনি৷ এই ঘটনাকে বিরলতম বলেও দাবি করেন সরকারি আইনজীবী৷
এ দিন অবশ্য সৌরভ চৌধুরীর আইনজীবী পাল্টা দাবি করেন, ১১ দিন ধরে পুিলশ হেফাজতে থাকলেও তাঁকে জেরা করেনি পুলিশ৷ তার বদলে সৌরভকে জেল হেফাজতে পাঠানোরও আবেদন জানানো হয়৷ যদিও শেষ পর্যন্ত বিচারক সৌরভ চৌধুরীক ২৫ অগাস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতেরই নির্দেশ দেন৷ ধৃত বাকি দুই ছাত্র মনতোষ এবং দীপশেখরের ২৬ অগাস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত৷ এ দিন আদালতে ঢোকার সময় অবশ্য সৌরভ দাবি করেন, ‘অপরাধী নই, সাজানো হচ্ছে৷’