২০০৫ সাল নাগাদ দেখা যায়, ওই পুরনো বিমানের চাকার গায়ে ফাটল ধরেছে, ক্ষয়ে গিয়ে ভেতরের লোহার তার বেরিয়ে পড়েছে। শুরু হয় নতুন চাকার সন্ধান। বিশ্বজুড়ে বিমান স্ক্র্যাপের বাজারে তন্ন তন্ন করে খোঁজ চালানো হয়, কিন্তু বোয়িং ৭৪৭-এর সেই নির্দিষ্ট মডেলের চাকা আর পাওয়া যায়নি। অবশেষে ২০১৮ সালে শুরু হয় আধুনিক বিমানের চাকা খোঁজার কাজ। দেখা যায়, সুখোই যুদ্ধবিমানের চাকা আয়তনে কিছুটা ছোট হলেও তা রথের সম্পূর্ণ ওজন বহনে সক্ষম। তবে এটি প্রতিরক্ষা খাতে ব্যবহৃত হওয়ায় সাধারণ বাজারে পাওয়া যায় না।
advertisement
ইস্কনের তরফে বহুবার আবেদন জানানোর পর, ২০২৪ সালে সুখোই চাকার নির্মাতা সংস্থার চেন্নাই হেড অফিস থেকে আসে সবুজ সংকেত। প্রথমে তাঁরা জানতে চান, প্রতিরক্ষা খাতে ব্যবহৃত এই চাকা কেন একটি ধর্মীয় সংস্থা কিনতে চায়। পরে জগন্নাথদেবের নাম শুনে তাঁদের অবস্থানে বদল আসে। বিশেষ এনকোয়ারির পর, ১ লাখ ৭৯ হাজার ২০০ টাকায় চারটি সুখোই চাকা ইস্কনকে দিতে রাজি হয় সংস্থাটি। চাকা কলকাতায় এসে পৌঁছায় মে মাসের ৬ তারিখে। ইতিমধ্যেই রথে বসানো হয়েছে সেই চাকা।
রবিবার সেই রথে নিউটাউন থেকে গুরুসদয় রোড পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ট্রায়াল রান সম্পন্ন হয়েছে সফলভাবে। ইস্কন সূত্রে জানানো হয়েছে, এবার ৭ জুলাই কলকাতার রথযাত্রা উপলক্ষে শহরবাসী প্রথমবারের মতো দেখতে পাবেন যুদ্ধবিমানের চাকার উপর চলতে থাকা ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথদেবের রথ। রথযাত্রা যেমন ধর্মীয় ভাবাবেগের, তেমনই এবার প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আরও এক ঐতিহাসিক মোড়ে পৌঁছল কলকাতার ইস্কন রথ।