#কলকাতা: শুক্রবার শেষ বারের মতো ককপিটে ভেসে আসবে এটিসি’র সংকেত। তারপরই যোধপুরের ভারতীয় বায়ুসেনার এয়ারবেস থেকে শেষবারের জন্য সকাল ন’টা নাগাদ উড়ে যাবে ‘বাহাদুর’। শেষ হবে ভারতীয় বায়ুসেনার আর এক গৌরবজনক অধ্যায়ের অংশ।
আটের দশকের শেষ দিকে ভারতীয় বায়ুসেনায় যোগ দেয় মিগ-২৭ যুদ্ধ বিমান। সোভিয়েত জমানার এই যুদ্ধ বিমান আকাশ থেকে মাটিতে নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত আনতে সক্ষম ছিল। একইসঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত হানতেও দক্ষ ছিল ভারতীয় বায়ুসেনার এই মিগ-২৭ যুদ্ধ বিমান। ভারতীয় আকাশসীমায় ঢুকে পড়া কোনও শত্রু বিমান চিহ্নিত করা ও তাকে আঘাত করার কাজও দক্ষতার সাথে করতে পারত বীর ‘বাহাদুর’। যদিও সময়ের সাথে সাথে এবার সেই ‘বাহাদুর’ কেও অবসর নিতে হচ্ছে।
advertisement
কার্গিল যুদ্ধে ভারতের সাফল্যের পিছনে অন্যতম বড় ভূমিকা ছিল এই মিগ ২৭ যুদ্ধ বিমানের। ভারতীয় বায়ু সেনা সূত্রে খবর ১৯৯৯ এর কার্গিল যুদ্ধের সময় শত্রু ঘাঁটি নিকেশ করার কাজে অন্যতম সহায়ক ছিল ভারতীয় বায়ুসেনার এই যুদ্ধ বিমান।এছাড়া দেশের হয়ে নানা অভিযানে অংশ নিয়ে সাফল্য কুড়িয়ে এনেছে এই মিগ ২৭ বিমান। বায়ুসেনার পাইলটদের কাছে মিগ-২৭ শুধু যুদ্ধ বিমান নয় এটা তাদের অন্যতম পছন্দের ‘বাহাদুর’। যাকে নিয়ে তাদের গর্বের ও ভালোবাসার শেষ নেই।
একটা সময় দেশকে সাফল্য এনে দেওয়া মিগ ২৭ যুদ্ধ বিমানের ব্যবহার অবশ্য অনেক কমেছে বর্তমানে। ভারতীয় বায়ুসেনা আধুনিক প্রযুক্তির যুদ্ধ বিমান ব্যবহার করছে তাদের জন্য। ‘বাহাদুর’ পাইলটদের অনেকেই জানাচ্ছেন কোনও দেশেই এখন আর সে অর্থে মিগ ২৭ এর ব্যবহার নেই। তাই সাফল্যের কর্মজীবনের শেষে যোধপুর থেকে অবসর নিচ্ছে তাদের ‘বাহাদুর’।
সাফল্যের পাশাপাশি ব্যর্থতাও আছে মিগ ২৭ কে ঘিরে। ১৯৯৯ সালের ২৭ মে কার্গিল যুদ্ধ চলাকালীন ইনজিন সমস্যায় পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভেঙে পড়ে একটি মিগ ২৭ বিমান। ২০০১ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে প্রায় ১২ টির কাছাকাছি মিগ ২৭ যুদ্ধ বিমান ধ্বংস হয় ভারতীয় বায়ুসেনার। ২০১০ সালের ১৬ ফ্রেবুয়ারি মাসে শিলিগুড়ির কাছে ভেঙে পড়ে একটি মিগ ২৭ যুদ্ধ বিমান। তারপরেই ধীরে ধীরে উড়ে বেড়ানো কমতে থাকে ‘বাহাদুর’ এর। ২০১৭ সালে ২৯ ডিসেম্বর মিগ ২৭ এমএল অবসর নেয়। এবার শুক্রবার ২৭ ডিসেম্বর অবসর নিতে চলেছে মিগ ২৭ বিমান। বায়ুসেনা সূত্রে খবর তাদের প্রিয় ‘বাহাদুর’ এর দেখা মিলবে এবার সংগ্রহশালায়।